slider

বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০২ ব্যাচের পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত

মো. নজরুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ : ”প্রকৃতি ও শেকড়ের টানে- অতীত ফিরে দেখি, বন্ধুত্বের বন্ধনে মানবতার গান করি” এই স্লোগানকে ধারন করে আজ মানিকগঞ্জ ঘিওর অঞ্চলের কালিগঙ্গার তীর ঘেঁষে পেঁচারকান্দা বাজার সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০২ ব্যাচ এর প্রাক্তন সহপাঠী বন্ধুদের উদ্যেগে এবং পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদ (এসএসসি-২০০২) এর আয়োজনে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে প্রীতি-পুনর্মিলন ও সম্মাননা স্মারক এবং র‌্যাফেল ড্র কুইজসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদ এর আহবায়ক তানসেন হোসেন খান ছোটন এর সভাপতিত্তে¡ ও সহপাঠী মো. নজরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদ এর সদস্য সচিব মো. নাজিরুল ইসলাম। টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ধোধন ঘোষনা করে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জনাব মো. ফারুক খান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সহকারি প্রধান শিক্ষক বাবু সতীশ চন্দ্র সরকার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব মো.ফারুক মিয়া, সহকারি প্রধান শিক্ষক জনাব মো. ইদ্রিস মিয়া, প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা সহকারি শিক্ষক জনাব বানেজ উদ্দিন মাস্টার, প্রাক্তন সহকারি শিক্ষক জনাব আব্দুর রহমান বিএসসি, প্রাক্তন মৌলভী শিক্ষক জনাব মো. ইস্কান্দার আলী, প্রাক্তন খন্ডকালীন শিক্ষক জনাব মো.ফরিদ মিয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বিশ^াস, স্মৃতিচরনমূলক আবৃত্তি করেন মো. নায়েব আলী। এছারাও কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন প্রাক্তন সহপাঠী মো. শরিফুল ইসলাম, গীতা পাঠ করেন পলাশ চন্দ্র শর্মা, মানপত্র পাঠ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী রনজু আক্তার,স্মৃতিচারণমূলক আলোচনায় অংশগ্রহন করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইব্রাহিম আল- মামুন, মো. জুলহাস মিয়া, মো. মুন্নাফ খান, বিনয় কুমার পাইন, রোকসানা আক্তার, মো. লাবলু মিয়া, মো. মনিরুজ্জামান সোহাগ, রাসেল আহমেদ প্রিন্স, মো. শাহিনুর রহমান, মো. হানিফ মিয়া,কার্তিক সরকার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আবেগ ধরে রাখেতে পারেনি। তার জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছেন এই বিদ্যালয়ে। তিনি দশ ঘন্টা পরিশ্রম করে এই বিদ্যালয়ের নামকরন করেন বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়। এছারাও রসিক মনে তরুণ্যের ভেতর আবেগ নিয়ে জনাব বানেজ উদ্দিন মাস্টার স্মরণ করেন- প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন, ছবেদ আলী,ওকেল উদ্দিন, স্বর্গীয় নারায়ণ চন্দ্র সরকার, খন্ডকালীন শিক্ষক এলিস খান, প্রয়াত শিক্ষার্থী তমা খান, হাসান আলী ও এ কে এম রাজিব চৌধুরীসহ পরোলগত শিক্ষক ও শিক্ষাীদেরকে।
প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন- ছাত্র শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে পাগলের মতো ঘুরেছি উদার ব্যাক্তি ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। যাদেরকে কাছে পেয়েছি ও সহযোগীতার হাত বাড়েিয় দিয়েছেন তাদের দু একজনের কথা না বলে পারছি না। বিদ্যালয়ের মুল জমি দাতা স্বর্গীয় অমূল্য চন্দ্র ঘোষ, স্কুলের আজীবন দাতা সদস্য অমর হয়ে থাকবেন বিদ্যালযের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের দাদা মহহুম শেখ নিয়ামত আলী,বিদ্যালয় নিবন্ধন কাজে ঢাকা বোর্ডে অতিরিক্ত ফি তৎতকালীন সময়ে ৭০০ টাকা দিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছোটনের বাবা শোধঘাটার জনাব শাসুল হোসেন খান। এছারাও অত্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলম খান এর সরাসরি ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় বিদ্যালয়ের টিনসেটওয়াল বড় বভনটি নির্মিত হয়। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন খান জকি, সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন মাস্টার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এম এ আওয়াল দেওয়ান পান্নু এর আমলেও বিদ্যালয়ের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এছারাও স্থানীয়ভাবে প্রয়াত দীলিপ ঘোষ, কাউটিয়ার ইসমাইল হোসেন মুন্সি, সাহেব আলী ভাঙ্গী, আব্দুল খালেক মাস্টার প্রমুখদের অবদান ভুলার নয়।

বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের বয়স অর্ধশতাব্দি পার করছে। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এবারই প্রথম একটি ব্যাচের পুনর্মিলন হতে যাচ্ছে। প্রীতি ও মিলন মেলার আগ মুহুর্তে আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে আমার হাজারও সন্তানদের অবয়ব ও অনেক নবীন-প্রবীন ও প্রিয় সহকর্মীদের মুখ। কেউ কেউ আমাদের ছেড়ে পরবারে পারি দিয়েছেন তবুও মনে হয় তারাও আমাদের সঙ্গেই আছেন। আজ আমি খুবই আবেগ তাড়িত, কেননা বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যাল আর আমার অস্তিত্ব প্রায় সমান্তরাল। আমি একজন দেশপ্রেমিক ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তাই এই সমাজ সভ্যতা দেশ ও জাতির উন্নয়নই আমার চিরদিনের ধ্যানজ্ঞান। একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা তোমাদের প্রতি আমার অনুরোধ নীতি নৈতিকতা ও আদর্শের বিসর্জন দিয়ে অর্থ ও খ্যাতির প্রত্যাশা করবে না। মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক বহুত্ববাদী চেতনার আদর্শে নিজের জীবন ও সমাজকে গড়ে তোলার কাজে সর্বদায়ী নিয়োজিত থাকতে থাকবে এই কামনা করি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button