বাঘাইছড়ি প্রতিনিধ: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবার তেজপাতার বামফার ফলন হয়েছে। কৃষি সম্পসারন অধিদপ্তর এর তথ্য মতে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ছোট বড় প্রায় ২০০ টি তেজপাতা বাগান রয়েছে প্রতিটি বাগানেই এবার আশানুরূপ ফলন হয়েছে আর বাজারেও তেজপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে মসলা ও ঔষধি গুনে সমাহার তেজপাতা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। পাহাড়ে মূলত মিশ্র বাগানের সাথে তেজপাতা চাষাবাদ করে থাকেন স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের মানুষজন। তবে বাজারে তেজপাতর ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেক কৃষক আলাদা ভাবে তেজপাতর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তেজপাতা বাগান একবার করেই বছরের পর বছর ফলন পাওয়া যায়। গাছ পরিপূর্ণ হওয়ার পর থেকেই ডাল পালা ছেটে তেজপাতা সংগ্রহ করা যায়। অল্প খরচে বেশী লাভজন চাষাবাদ হচ্ছে এই তেজপাতা চাষ, বাজারে পাইকারী দরে প্রতি কেজি পাতা ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ২১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার প্রশিক্ষণ টিলা এলাকায় গিয়ে দেখাযায় তেজপাতা ব্যাবসায়ি রফিকুল ইসলাম বাগান থেকে সংগ্রহ করা তেজপাতা স্থানীয় পাহাড়ি নারী শ্রমিকদের সহায়তায় ডাল পালা থেকে আলাদা করার কাজ করছে। তেজপাতা ব্যাবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানায় এবার পাহাড়ে তেজপাতার ভালো ফলন হয়েছে তাই তার ব্যাবসাও ভালো হবে আশা করছে সে। রফিকুল ইসলাম জানায় সে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে বাগান ক্রয় করে স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে পাতা সংগ্রহ করে বাজার জাত করে পাইকারী ব্যবসায়ী দের নিকট সরবরাহ করে থাকে এতে যা আয় হয় তা দিয়ে তার ৬ সদস্যের সংসার চলে। উপজেলার চার কিলো বাঙালী পাড়া এলাকার তেজপাতা চাষী মোহাম্মদ আলী জানান কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনিসহ আরো ২০ জন চাষী প্রায় ৩০ একর জায়গায় তেজপাতার আবাদ করেছেন, সবমিলিয়ে এলাকায় প্রায় ৩ হাজার গাছ রয়েছে প্রতিটি গাছ ১৬০০ টাকা করে বিক্রি হলে প্রায় ৪৮ লাখ টাকার লেনদেনের আশা জাগাচ্ছে। কালামোড়া এলাকার তেজপাতা চাষী রাঙ্গু চাকমা বলেন আমি প্রায় ২ একর জায়গায় নিজ উদ্যোগে তেজপাত চাষ করেছি, কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিলেও কোন ধরনের হতাহতা করেনি সরকারি সহায়তা পেলে আরো ভালো ভাবে চাষ করা যেতো, তাই পাহাড়ে তেজপাতা চাষীদের জন্য সরকারি ভাবে সহায়তা কামনা করছি। উপজেলা কৃষি সম্পসারন অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তোফায়েল আহম্মেদ বলেন পাহাড়ে জুমচাষ বন্ধে কৃষি সম্পসারন অধিদপ্তর মিশ্র ফল বাগান ও বিভিন্ন ধরনের মসলা বাগান করার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে তারই ধারাবাহিকতায় বানিজ্যিক ভাবে পাহাড়ে তেজপাতা চাষ করা হয়েছে, কৃষি বিভাগ পরামর্শ প্রদান করলেও তেজপাতা চাষে আলাদা কোন প্রকল্প না থাকায় সার বীজ, কিটনাশক দিয়ে সহায়তা সম্ভব হয়নি, তবে বাঘাইছড়িতে এবার কোটি টাকার তেজপাতার কেনাবেচার সম্ভাবনা রয়েছে।