বাংলাদেশ-ডেনমার্ক পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে-প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে এই দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা যায়। ..এছাড়া জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও আমরা ডেনিশদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারি।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত হানে ফুজাল এসকায়ের আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এবং বিদেশে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবারের বিশেষ চাহিদার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ এখন খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে জোর দিচ্ছে। এসব কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের পর বিদেশে রপ্তানী করাই এর অন্যতম লক্ষ্য।
তাঁর সরকার নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের একটি বড় অংশ এই নারী জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে কখনও দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাই যেখানে নারী, সেখানে তাদের বাদ দিয়ে আমরা উন্নয়নের ধরাকে এগিয়ে নিতে পারব না।’
নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকার গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।
আমাদের দেশের নারীরা বর্তমানে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন উচ্চপদে দায়িত্ব পালনরত রয়েছেন বলেও এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান।
সারাদেশে নারী উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের নারীরা এখন পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শিক্ষা, খেলাধূলা এবং বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে এগিয়ে যাচ্ছে।
খেলাধূলার বিভিন্ন শাখায় আমাদের নারীরা এখন ভালো করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের ফুটবল ও ক্রিকেটের সাফল্যের তথ্য তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তাঁর সরকারের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার সারাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে।
এখন জনগণ মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূত ফুজাল এসকায়ের দায়িত্ব পালনকালিন এ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছে।
বাংলাদেশে ডেনিশ অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের সুযোগ দেয়ার জন্য ডেনিশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা পরস্পরের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত এদেশে দায়িত্ব পালনকালিন সবরকমের সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ও প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। বাসস