sliderঅর্থনৈতিক সংবাদশিরোনাম

বাংলাদেশে শ্রমঅধিকার নিশ্চিত দেখতে চায় ইইউ পার্লামেন্ট

বাংলাদেশের যেসব কারখানা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ব্র্যান্ডগুলোর কাছে পোশাক রফতানি করে ওই সব কারখানার নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা চায় ইউরোপ। সেই সাথে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদও তাদের। বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল আজ শুক্রবার তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাথে বৈঠকে এ বিষয়টিতে জোর দেয়।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এ বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, মাহমুদ হাসান খান বাবু, মোহাম্মদ নাসির, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট মেম্বার ইভান স্টেফানিক ও ক্রিস্টিন আর্প বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রতিনিধিদলের প্রধান জিন ল্যাম্বার্ট বলেন, ইউরোপ বাংলাদেশে একটি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই তৈরি পোশাক শিল্প দেখতে চায়। এ জন্য শ্রমিকের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুররুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সফরকালে আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, আইএলও, অ্যাকর্ড (ইউরোপভিত্তিক কারখানা পরিদর্শন জোট), শ্রমিক অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছি। আমরা সাক্ষাত করেছি প্রধানমন্ত্রীর সাথেও। সর্বশেষ বিজিএমইএর সাথে বৈঠক হলো। সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি শ্রম অধিকার নিয়ে কী কী অগ্রগতি হচ্ছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কারখানার সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে জেনেছি। বেশকিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন ও বিধি কারখানা মালিকদের মানা উচিত।
বর্তমানে দেশের গার্মেন্টস কারখানার অগ্নি, ভবনের কাঠামো ও বৈদ্যুতিক সংস্কার তদারক করছে ইউরোপের নেতৃত্বাধীন পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ড। আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে সব কারখানার সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে অ্যাকর্ডের।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপের প্রতিনিধিরা ২০১৮ সালের পরেও কারখানা সংস্কার কাজ তদারকির জন্য অ্যাকর্ডের প্রয়োজন হবে কি-না তা জানতে চেয়েছেন। গার্মেন্টস খাতের বাইরে অন্যান্য খাত বিশেষত চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ শিল্প, চিংড়ি শিল্পে গার্মেন্টস খাতের ন্যায় অ্যাকর্ডের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা যায় কি-না এবং এদেশে ব্যবসায়ের পরিবেশ সম্পর্কে উদ্যোক্তাদের ভাবনা সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন তারা।
জবাবে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। ফলে এর পর অ্যাকর্ডের আর থাকার প্রযোজন হবে না।
বিজিএমইএ সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি সঠিক পথেই আছে। কারখানার মালিকদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে।
তারা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন, ব্যবসা চালাতে হলে বাকি দুই বছরের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিনিধিদল গার্মেন্টস কারখানার সংস্কার কাজের অগ্রগতি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেননি। সংস্কারের অগ্রগতিতে তারা সন্তুষ্ট। এ সময় পোশাক মালিকরা ইউরোপে রফতানি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন। বিষয়টি নিয়ে ইউরোপের প্রতিনিধিরা আলোচনা করার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন। তবে এদেশে শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে তাদের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পকে আরো সম্প্রসারণ করার আগ্রহের কথা জানালে বিজিএমইএ নেতারা এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যের প্রধান বাজার ইউরোপ। ইউরোপের বাজারে রফতানি হয় তৈরি পোশাকের ৬০ শতাংশের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা না পেলেও ইউরোপের বাজারে জিএসপির আওতায় শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা পায় বাংলাদেশ। সুত্রঃ নয়াদিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button