বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলল এমসিসিআই: বিশ্লেষকের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রভাবশালী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) দেশের ব্যাংকিং খাতকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে এই চ্যালেঞ্জ যথাযথভাবে মোকাবিলার তাগিদ দিয়েছে।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধের অর্থনৈতিক পর্যালোচনা তুলে ধরে এমসিসিআই বলেছে সার্বিকভাবে অর্থনীতির কিছু সূচক ইতিবাচক হলেও অন্তত আটটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে দ্রুতই।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকের (জুলাই-ডিসেম্বর) এ পর্যালোচনা প্রতিবেদন গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
এ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনীতির বেশির ভাগ সূচকই ‘অস্বস্তিকর’ অবস্থায় রয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও কালো মেঘের ঘনঘটা। ব্যাংকিং খাত ছাড়াও মূল্যস্ফীতির চাপ, আমদানি-রপ্তানির গতি মন্থরতা, রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে ধীরগতি, শেয়ারবাজারের সূচকের পতন, বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতি এবং বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ধীর গতিকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
একইসঙ্গে অবকাঠামোর দুর্বলতা, গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যার পাশাপাশি ত্রুটিপূর্ণ সঞ্চালন লাইনের সমস্যা মোকাবিলা করছে উদ্যোক্তারা। এটি উৎপাদন খাতের ওপর প্রভাব ফেলছে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের স্বার্থে বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখার প্রতিও গুরুত্ব দিয়েছে এমসিসিআই। এমসিসিআই মনে করছে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
রাজেকুজ্জামান রতন
এ প্রসঙ্গে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন রেডিও তেহরানকে বলেছেন, দেশে রাজনীতিহীনতা ও দুঃশাসন, অর্থনীতিতে সীমাহীন দুর্বৃত্তায়ন, আইনের শাসনের অভাব- এসবের ফলে জনদুর্ভোগ বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, দুর্নীতি সর্বগ্রাসী হয়েছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতেই হবে। কারণ, দেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বহাল থাকলে জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে না। আর তার প্রভাবে শিল্পখাতও বির্যস্ত হতে বাধ্য।
এমসিসিআই’র পর্যালোচনা প্রতিবেদেনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে ছিল যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। একই সময়ে কৃষি উৎপাদন ও সেবাখাত ভালো করেছে। তবে এসব খাতের স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করা হয়েছে।
পার্সটুডে