sliderস্থানীয়

বন্যাদুর্গত আলেমদের মাঝে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার নগদ অর্থ বিতরণ

আবু তালহা তোফায়েল,সিলেট : আর্তমানবতার সেবায় আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.)প্রতিষ্ঠিত রাজধানীর বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা সর্বদাই তৎপর রয়েছে। দেশের যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে জামিয়ার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিপদগ্রস্তদের উদ্ধারে যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২ জুলাই) সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জামিয়ার শিক্ষকমণ্ডলীর প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ আলেমেদ্বীন- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, শিক্ষাপরিচালক মুফতী মকবুল হোসাইন কাসেমী, মুহাদ্দিস মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী, মুফতী জাবের কাসেমী, মাওলানা আবু বকর কাসেমী, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, মাওলানা হোসাইন আহমদ প্রমুখ।
বিভিন্ন স্পটে বক্তব্যকালীন জামিয়ার শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, যে আল্লাহ তাআলা পৃথিবী এবং আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই বন্যা দিয়েছেন। বন্যায় কি লাভ এটা একমাত্র তিনিই জানেন। আল্লাহর দেয়া কোন গযব ক্ষতির জন্য নয়; বরং লাভের জন্য। যেখানে হালাল-হারামের বাচবিচার নেই, দ্বীনদারী নেই, মানুষজন বেনামাজি সেখানে এধরণের আজাব-গযব আসে। এই আজাব-গযব আমাদের জন্য রহমত হবে- যদি আমরা নামাজী হই, দ্বীনদারী ও হালাল-হারাম বাচবিচার করে চলি।
তিনি আরো বলেন, মাথা বিচ্ছিন্ন শরীরের যেমন দাম নেই ঠিক তেমনিভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন আলেমেরও কোন দাম নেই। সমাজকে জাহেল-মূর্খদের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা আলেমদের কাজ নয়।
আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক ইসলাম বিদ্বেষী ও দেশ বিরোধী কোন শক্তির সাথে নিজ এলাকার মানুষজন জড়িত কিনা, খ্রিস্টান মিশনারী ও ইসকনের সাথে এলাকার লোকজন জড়িয়ে পড়ছে কিনা সেদিকে সতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র বড় মুফতী, মুহাদ্দিস হওয়া আলেমদের কাজ নয়। বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সাথে সমাজের নেতৃত্ব দেয়াও আলেমসমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি আরো বলেন, নিজ এলাকায় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামাত ও জাতীয় পার্টির আধিপত্য চলবে আর আলেমরা হাদিয়া খাওয়ার ধান্দায় আমি রাজনীতি করি না এই বলে স্লোগান দিবে এটা বিচক্ষণ উলামার পরিচয় হতে পারে না৷ আপনি রাজনীতি করেন না বলে স্লোগান দিলেন তাহলে কি শয়তানের নীতি অবলম্বন করলেন? যারা বলে রাজনীতি করি না তারা দেশ লুটপাট হয়ে গেলেও নিরব ভুমিকা পালন করবে। আর এইসব হুজুররাই মাদরাসাগুলোতে রাজনীতি করতে বিচক্ষণ আলেমদের বাধা প্রদান করে।
জামেয়ার শিক্ষা সচিব মুফতী মকবুল হোসেন কাসেমী বলেন, বিপদে পড়ে আল্লাহকে যেনো ভুলে না যাই। পরীক্ষা আসবেই৷ এই বন্যা আমাদের সিলেটবাসীর জন্য একটা পরীক্ষা। পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। সবরের মাধ্যমে আমরা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। মসজিদগুলো আবারও আবাদ করতে হবে।
জামিয়ার মুহাদ্দিস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.)এর সাহেবজাদা মুফতী জাবের কাসেমী বলেন, বাংলাদেশ শতকরা বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশের জাতীয় শিক্ষানীতি থেকে ইসলাম ও ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে বহুদিন থেকেই। এব্যাপারে সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন শফিকুল হক আমকুনী রহ. ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ও সোবহানিঘাট মাদ্রাসার নাইবে মুহতামিম মাওলানা আহমদ সগীর, জাউয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস জামিল আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ, মাওলানা মঈনুদ্দিন, মুফতী জামাল উদ্দিন উদ্দিন কাসেমী, ছাত্রনেতা নূর হোসেন সবুজ, মাওলানা মাসউদ আজহার, শাহবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ফারুক আহমদ, সাংবাদিক আবু তালহা তোফায়েল প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button