ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের ভুবনেশ্বর নদের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি কুমিরের দেখা মিলেছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গাজিরটেক ইউনিয়নের ব্যাপারী ডাঙ্গী গ্রামের লোকমান মাতুব্বরের বাড়ির কাছে কুমিরটি দেখতে পায় স্থানীয়রা।
কুমিরটি দেখে এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে এশার নামাজের পর মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়। খবর পেয়ে রাতেই চরভদ্রাসন থানা পুলিশ স্থানটি পরিদর্শন করেছে।
তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কুমিরটি ওই এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরে তেলিডাঙ্গি এলাকায় অবস্থান করছিল বলে জানা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাত ১১টার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় লোকমান মাতুব্বরের বাড়ির কাছে একটি বাঁশের সাঁকোর নিচে কুমিরটি অবস্থান করছে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পর পানি থেকে মাথা উঠিয়ে আবার ডুব দিচ্ছে কুমিরটি।
সুজন বেপারী জানান, কুমিরের বিষয়টি সন্ধ্যার পরে এলাকায় জানাজানি হয় এবং পরে এ ব্যাপারে মসজিদের মাইকে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়।
সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: কাউছার ব্যাপারী বলেন, কুমিরের খবর পেয়ে তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করেছেন। কিন্তু কুমিরটি উদ্ধারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে কুমিরের খোঁজে পুনরায় ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কুমিরটি পূর্বের স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভাটিতে তেলিডাঙ্গী সিকদার ডাঙ্গী এলাকায় অবস্থান করছে। সেখানে নদের পানিতে কিছু সময় পর পর মাথা তুলে আবার ডুব দেয় কুমিরটি। এসময় কুমির দেখতে নানা বয়সী উৎসুক মানুষকে রাস্তার দুই পাশে ভিড় করতে দেখা গেছে।
কুমিরটি উদ্ধারে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শঙ্কা প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, এই নদের পানিতে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা গোসল করার পাশাপাশি গবাদি পশু গোসল করানো হয়। এখনো কুমিরটি উদ্ধার না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী মোর্শেদ বলেন, কুমিরের বিষয়টি আমি বনবিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সংশ্লিষ্টরা খুব শিগগিরই কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করবে। একইসাথে এলাকাবাসীকে আপাতত গোসল বা নদে নেমে অন্য কোনো কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া জানান, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। খুলনা বিভাগীয় অফিসে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা সেখান থেকে কুমিরটি উদ্ধারে একটি টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করছে।
খুলনা বিভাগীয় বন অধিদফতরের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কুমিরটির অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। সঠিক অবস্থান জানতে পারলে আমাদের একটি টিমকে উদ্ধার অভিযানে পাঠানো হবে।
সূত্র : ইউএনবি