sliderস্থানীয়

প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের বাহিরে সরকারি ঔষধ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের গেইটে পরিত্যক্ত অবস্থা সরকারি ঔষধ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ এনিয়ে জনমনে দেখা দেয় চরম ক্ষোভ৷ পরে স্থানীয়দের খোঁজাখুঁজিতে হাসপাতালের কর্মচারী চয়ন ও মিজানুর রহমান এসে কার্যালয়ের তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন এবং তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান হাসপাতাল সংলগ্ন ভেটেরিনারি মেডিসিন কর্ণারের স্বত্বাধিকারী বিশ্বনাথ রায় (৬০) কে প্রশাসনিক কার্যালয়ের ভেতরে৷ অফিস তালাবদ্ধতা নিয়ে এলাকাবাসীর জনরোষের সামনে বিশ্বনাথ রায় বলেন, অফিসে অবিজ্ঞ লোক না থাকায় জেলা কর্মকর্তা ডা: মো: রফিকুল ইসলাম তাকে চাবি দিয়েছিলেন অফিসের কাজ করার জন্য৷ এনিয়ে নানান গুঞ্জনের একপর্যায়ে জেলা কর্মকর্তা ডা: মো: রফিকুল ইসলামকে ফোন দিয়ে এলাকাসীর কাছথেকে অবমুক্ত হন বিশ্বনাথ রায়৷ গত রবিবার ১৮ আগষ্ট ২০২৪ইং রাত সোয়া ৮টার দিকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটেছে৷

প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি ঔষধ বিক্রি সহ নানান অনিয়ম ও দূর্নীতি সংঘটিত হয়ে আসছে৷ প্রায়ই ভুক্তভোগীরা স্থানীয় পরিচিত জনদের জানায় গ্রাম থেকে আসা কৃষকরা হাসপাতালে গেলে ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন নির্দিষ্ট ফার্মেসীতে যাওয়ার জন্য৷ এতে করে ডাক্তারের রমরমা কমিশন বাণিজ্য হয়ে যাচ্ছে৷ এছাড়াও প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে খামারিদের জন্য সরকারি ভাবে ট্রেনিংয়ের সুবিধা দিলেও ৩দিনের ট্রেনিং কার্যক্রম ১ দিনে সম্পন্ন করা হচ্ছে৷ এতে করে দুই দিনের ট্রেনিংয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে৷ আরও জানান, হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জে প্রাকৃতিক দূর্যোগকালে সরকার বিভিন্ন প্রনোদনা দিলে তা সুসম বন্টন হচ্ছেনা৷ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করার কথাও রয়েছে৷ সরকারি ভাবে ভর্তুকিকৃত বিভিন্ন ভেকসিন দেওয়ার কথা থাকলেও সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন গরীব কৃষক ও খামারিগণ৷ এ সকল ভেকসিন উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে খামারে খামারে ও ভেটেরিনারি ফার্মেসীতে৷ সরকারি ভাবে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন  এলাকাগুলোতে ভেকসিন কর্যক্রম করার কথা থাকলেও ভেকসিন কার্যক্রম হচ্ছেনা৷ জনসাধারণের প্রশ্ন তাহলে এসকল ভেকসিন কোথায় যাচ্ছে৷ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফয়জনূর গণমাধ্যমকে বলেছেন – এশার নামজে মসজিদে যাওয়ার পথে কিছু মানুষের জটলা দেখে বিষয়টি জানার জন্য সামনে এগিয়ে দেখতে পাই কিছু সরকারি ঔষধ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার পাশে লোহার একটি পিঞ্জিরা বাহিরে পড়ে রয়েছে এবং দোতলার সিড়িঁর উপরে উঠতে গেলেও দেখি এখানেও কিছু ঔষধ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে৷ এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর বলেন – জেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে কিছু লোকজনকে জড় হওয়া দেখি এবং তার আমাকে ডাকলে আমি কাছেগিয়ে দেখতে পাই হাসপাতালের সরকারি ঔষধ কার্টুনকরা অবস্থায় বাহিরে পড়া এবং হাসপাতালে তালাবদ্ধ৷ বিষয়টি দেখে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ডাকদিলাম কেউ নেই৷ পরবর্তীতে প্রাণী হাসপাতালের মিজানুর সাহেব কে খুঁজে বের করার পর তিনি গেইটের তালা খুললে হাসপাতাল বাহিরে ও ভেতরে ঔষধ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে দেখি৷  দ্বিতীয় তলায় উঠলে দেখতে পাই ফার্মেসীর বাবু তালাবদ্ধ অবস্থায় গেইটে আটক রয়েছে৷ তখন মিজান সাহেবকে বাবুর কথা জিজ্ঞেস করলেন  তিনি সবার সামনে বলেন আমারা তালাদিয়ে অফিস বন্ধ করে বাহিরে চলে যাই৷ মিজান সাহেব বাবুকে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কখন আসলেন তিনি জানান সন্ধ্যার পরপর৷ তিনি আরো বলেন সরকারি সম্পদ কেন রাতে বাহিরে থাকবে এটা কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবেন৷ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হউক৷ এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ রায় বলেন – জেলা কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি হাসপাতালে প্রশাসনিক কাজ করতেই এসেছেন৷ তবে বাহিরে এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঔষধের ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি৷ আরো বলেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ২৮ বছর চাকুরি করেছেন৷ তিনি অবসরে গিয়েছেন ৩ বছর হয়৷ আবসরে যাওয়ার পর তিনি হাসপাতাল সংলগ্ন ভেটেরিনারি মেডিসিন কর্ণার নামে প্রাণীজ ঔষধের দোকান খুলেছেন৷ এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) ডা: মো: রফিকুল ইসলাম বলেন – বিশ্বনাথ রায় আমাদের অফিসে পূর্বে কর্মরত ছিলেন৷ তিনি আমার অনুমতিতেই তিনি কার্যালয়ের ভেতরে রাতে ডুকেছেন প্রশাসনিক কিছু কাজ করার জন্য৷ আমার যোগদানের পূর্বেই জেলার ঔষধ বন্টন শেষ হয়েছিলো৷ কিন্তু কি করে হাসপাতালে বাহিরে ঔষধ গিয়েছে সে বিষয়ে আমি তদন্ত কমিটি করেছি এবং ৭ দিনের মধ্যে তা খুঁজে বের করা হবে৷

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button