নাটোর প্রতিনিধি : বড়াইগ্রামে প্রভাবশালী জোতদারের বিরুদ্ধে ভূমিহীন প্রতিবন্ধী পরিবারকে খাস জমি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাদের বাধা ও অব্যাহত উচ্ছেদ চেষ্টার মুখে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারানোর শঙ্কায় নির্ঘুম দিন কাটাচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামের হোসেন মোল্লার ছেলে চলন প্রতিবন্ধী আব্দুল হাকিম প্রায় দুই বছর আগে সংগ্রামপুর মৌজার ৩২১ হালদাগে তিন শতক খাস জমিতে একটি টিনের ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন। একটি ঘরেই তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী বন্যা খাতুন ও আরেক প্রতিবন্ধী মামা সুরুজ আলী (৪৫) কে নিয়ে দিন যাপন করে আসছেন। সম্প্রতি স্বজনদের আর্থিক সহায়তায় তিনি সেখানে আরেকটি টিনশেড ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিন্তু একই গ্রামের ওয়াজউদ্দিন ভূঁইয়া তাকে নতুন ঘর নির্মাণে বাধা দেন। এমনকি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে পুরনো ঘরটিও সরিয়ে নিতে বলেন। অন্যথায় তিনি লোকজন দিয়ে ঘর ভেঙ্গে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেবেন বলে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ১২ ফুট দৈর্ঘের একটি ছাপড়া ঘরে তিনজন প্রতিবন্ধী মানুষ কোন রকমে বসবাস করছেন। একটু বৃষ্টি এলেই ঘরের ভেতর পানি পড়ে। জোতদারের বাধায় নির্মাণ কাজ করতে না পারায় বর্তমানে গৃহস্থালী সামগ্রীসহ ঘর নির্মাণের যাবতীয় আসবাবপত্র খোলা আকাশের নীচে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধী আব্দুল হাকিম বলেন, আমার নিজের কোন জমি নেই। তাই রাস্তার পাশে ফাঁকা খাসজমিতে ঘর বানিয়ে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই করেছিলাম। ছোট্ট একটি ছাপড়া ঘরে তিনজন মানুষ থাকি, জায়গার অভাবে ছেলেমেয়ে দুটি অন্যত্র দাদির কাছে থাকে। কিন্তু জোতদাররা যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছে তাতে এ আশ্রয়টুকুও হারানোর শঙ্কায় আছি।
এ প্রসঙ্গে ওয়াজউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, খাসজমিটুকু আমার জমির আগত (সামনে)। এ খাসজমি আমি ভোগ করবো, তাই তাকে ঘর ভেঙ্গে নিতে বলেছি।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।