প্রধানমন্ত্রী রোববার মেট্রো রেল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন
ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দাদের বহু কাঙ্ক্ষিত মেট্রো রেল চালুর স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এই রেল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র শুক্রবার বাসসকে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে মাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ হিসেবে পরিচিত দেশের প্রথম মেট্রো রেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন।
সূত্র আরো জানায়, প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠান থেকে ঢাকা সাসটেইন্যাবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের অধীনে গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ কাজের অংশ হিসেবে গাজীপুর বাস ডিপোর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এগিয়ে আনার ফলে ২০.১ কিলোমিটার মেট্রো রেল ২০১৯ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলাচল শুরু করবে।
প্রকল্পে অর্থায়নকারী জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সী (জাইকা) এ বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত মাসে উত্তরা তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের দিয়াবাড়ি বাজার এলাকা মেট্রো রেল ডিপো উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরটি-৬ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে জাইকা ১৬ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার অবশিষ্ট অর্থ প্রদান করছে। দ্রুত গতির মেট্রো রেল উত্তরা থেকে মিরপুর ও ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করবে। প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে থেমে প্রতি ঘণ্টায় এটি ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। এই ২০.১ কিলোমিটার এমআরটি লাইন ৬ উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে পল্লবী, রোকেয়া সরণীর পশ্চিম পাশ ও ফার্মগেট, হোটেল সোনারগাঁও, রূপসী বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড ও বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত চলাচল করবে।
এই যাত্রা পথে ১৬টি স্টেশন থাকবে- উত্তরা নর্থ, সেন্ট্রাল ও সাউথ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণী, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্ত্বর, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক। এমআরটি লাইন ৬ চালু হলে মহনগরীর যাত্রী সাধারণ চলাচলের সুবিধা পাবে এবং ক্রমবর্ধমান এই নগরীর যানজট থেকে মুক্তি পাবে।
এছাড়া, পথচারীরা মহানগরীর ফুটপাথগুলোতে স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারবেন এবং হেঁটে অনেক স্থানে যেতে পারবেন। কারণ, নতুন পরিবহন ব্যবস্থা সড়কে চলাচলকারী মানুষের অনেক চাপ লাঘব করবে।
কাদের বলেছেন, ভূমি উন্নয়ন ও ডিপো এলাকার স্থাপনা নির্মাণে ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
তিনি বলেছেন, প্রকল্প কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে ডিপো স্থাপনের জন্য আন্তজাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বাছাইকৃত জাপানী প্রতিষ্ঠান টোকিও কন্সট্রাকশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছেন, এমআরটি লাইন ৬ অনুযায়ী বিদ্যমান রুট পরিবর্তনের আর কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে।
কাদের আরো বলেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাউন্ডপ্রুফ মেশিন এই ব্যবস্থায় সংযুক্ত করা হবে। কারণ, এই পরিবহনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ভবন, টিএসসি এবং জাতীয় জাদুঘরের পাশ দিয়ে যাতায়াত করবে।
সরকার ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এমআরটি লাইন ৬ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জাইকার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অন্যদিকে, ২০৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিংহভাগ অর্থ সহায়তা হিসেবে প্রদান করছে। বাসস