sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

প্রথম ভাষণে মুসলিম তরুণীদের প্রতি সাহসী বার্তা অস্ট্রেলিয়ান হিজাবি সিনেটর ফাতেমার

নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার সিনেটরদের সামনে ভাষণ দিলেন দেশটির ইতিহাসের সর্বপ্রথম হিজাবি সিনেটর ফাতেমা পেমান (২৭)। ভাষণে তিনি মুসলিম তরুণীদের গর্বের সাথে হিজাব পরিধানের প্রতি উৎসাহিত করে সাহসী বার্তা দেন। তাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যেসব ছোট তরুণী হিজাব পরিধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, আমি চাই তারা তা গর্বের সাথে পরিধান করুক এবং অনুভব করুক- এটি তার অধিকার।’ ভাষণের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘হিজাব আমার স্বাধীনতা।’
গত মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার সিনেটে ভাষণ দেন ফাতেমা। তার সাহসীপূর্ণ ওই ভাষণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ প্রভাব ফেলেছে। ব্যবহারকারীরা বলছেন, ভাষণটি প্রভাব সৃষ্টিকারী ও শক্তিশালী ছিল।
ভাষণের শুরুতেই ফাতেমা পার্লামেন্টে তার হিজাব পরিধান করে উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার হিজাব পরিধান প্রমাণ করে যে, অস্ট্রেলিয়ায় বাস্তবেই জাতিগত বৈচিত্র রয়েছে।’
এ সময় হিজাব পরিহিতা হয়ে তার এই উপস্থিতি ও অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ফাতেমা জানান, তিনি তার এই যাত্রায় অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবেন বলে আশা রাখেন।
ভাষণের একপর্যায়ে আনন্দাশ্রু সংবরণ করতে পারেননি ফাতেমা। নিজের বাবার কথা স্মরণ করে কেঁদে ফেলেন তিনি। দুই যুগ আগে তার বাবা আফগানিস্তান থেকে অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী হন। তিনি বলেন, আজ যদি আমার বাবা এখানে থাকতেন, তাহলে দেখতে পারতেন তার ছোট্ট মেয়েটি কোথায় পৌঁছেছে?
সিনেটে তার বাবার আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন ফাতেমা। তিনি জানান, তার অভিবাসী বাবা পাহারাদারি করে ও গাড়ি চালিয়ে উপার্জন করতেন। তিনি পরিবারকে একটি সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিতের জন্য নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছেন। ফাতেমা বলেন, ‘কে এ কথা ভাবতো যে, আফগানিস্তানে জন্মগ্রহণকারী একটি মেয়ে, যার বাবা কিনা একজন শরণার্থী-সে আজ অস্ট্রেলিয়া সিনেটে সবার সামনে ভাষণ দিচ্ছে।?’
এর আগে নির্বাচিত হওয়ার পর ফাতিমা পেমান বলেছিলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে নির্বাচিত হতে পেরে খুবই গর্বিত। অভিবাসী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে আমি সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, ফাতিমা পেমান আট বছর বয়সে তার মা ও তিন ভাই-বোনের সাথে অভিবাসী হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন। সেখানেই তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। পরে রাজনৈতিক দল লেবার পার্টিতে যোগ দেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবিনস ও উপ-প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিক গোরম্যানও ফাতিমা পেমানের সিনেটের সদস্য হওয়ায় খবরে খুশি প্রকাশ করেছিলেন।
সূত্র : আলজাজিরা

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button