sliderঅর্থনৈতিক সংবাদশিরোনাম

প্রজ্ঞাপনের পরও রূপালী ব্যাংকের এমডি নিয়োগে ষড়যন্ত্রের শিকার সিংগাইরের আব্দুর রহিম

সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ): বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে প্রসংসিত ও সমাদৃত হয়েছেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুর রহিম। প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পরও ইতিপূর্বে প্রকাশিত কবিতা ও প্রবন্ধে প্রকাশকের দেয়া প্রচ্ছদের কারণে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও পদে তার নিয়োগ ঝুলে আছে। মোঃ আব্দুর রহিম মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের জায়গীর গ্রামের মোঃ ইয়াছিন শেখের বড় ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুর রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে বিএসসি সম্মান এবং এমএসি সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে রূপালী ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। বিভিন্ন পদে দায়িত্ব শেষে ২০২১ সালে ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপক পরিচালক (ডিএমডি) হিসাবে পদন্নতি পান। পরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং বেসিক ব্যাংকে সুনামের সঙ্গে ডিএমডি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সহ তার পরিবারের কেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তবে পেশাগত দক্ষতা ও সততায় তিনি আপোষহীন। ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের পাশাপাশি গবেষনাকর্ম এবং কবিতা চর্চায় তার ঝোক রয়েছে।

এদিকে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) একযোগে ১০টি সরকারী ও বিশেষায়িত ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে সোনালী, জনতা, অগ্রণীসহ ৯ ব্যাংকের এমডিরা ইতোমধ্যে যোগদান করেছেন। কিন্তু তার একটি কবিতায় এডিটের মাধ্যমে ব্যবহার করা প্রচ্ছদকে ইস্যু করে রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. আব্দুর রহিমের নিয়োগ ঝুলে আছে। এদিকে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও নিয়োগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রস্তুত করা চিঠিও তাকে পাঠানো হয়নি। যদিও ‘মাসিক জনপ্রশাসনে’ প্রকাশিত তাঁর সেই ‘নি:শেষে সৃষ্টি’ এবং ‘বৃক্ষের শিক্ষা’ কবিতার প্রচ্ছদ বিকৃতির বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন সাময়িকীটির সম্পাদক এবং প্রকাশক নঈম মাশরেকী।
এ বিষয়ে মো. আব্দুর রহিম বলেন ‘বৃক্ষের শিক্ষা” ও ” নিঃশেষে সৃষ্টি’সহ আমার লেখা বেশকিছু কবিতা প্রকাশিত রয়েছে। তবে সেগুলো কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নয়। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য ছাড়ানো হচ্ছে। শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে বই প্রকাশ করার যে তথ্য ছাড়ানো হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়। শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে আমি দুটি কবিতা লিখেছি মর্মে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সে দুটি কবিতা আমার মূল বইয়েও রয়েছে। কিন্তু আগেই প্রকাশিত মূল বইয়ে কোথাও ওই দুটি কবিতাতে শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি নেই এবং তাদেরকে নিয়ে একটি শব্দও ব্যবহৃত হয়নি। এমনকি তাদেরকে ইঙ্গিত করেও কোন শব্দ নেই। তাঁর লেখা কবিতা ও বইয়ে এডিট করে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি বসানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছরের ক্যারিয়ারে আওয়ামী পন্থীদের দ্বারা সুবিধাতো দূরের কথা বরং বিভিন্ন সময়ে বঞ্চনার শিকার হয়েছি। আমার যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং শক্তিশালী নৈতিকাতা সহ্য করতে না পেরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এসব রটনা ছড়াচ্ছেন। একটা ঠুনকো বিষয়ে এমডি পদে নিয়োগ ঝুলিয়ে রাখা মেধাবী এবং যোগ্যদের জন্য অসম্মানের। এ নিয়োগ বিলম্বে আমি বিব্রত। এ বিষয়ে আমি সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি।

উল্লেখ্য,শেখ হাসিনা সরকারের সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডিদের চুক্তির বাকি মেয়াদ বাতিল করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপর ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইও পদ শূন্য হয়। এরপর রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও চারটি বিশেষায়িত ব্যাংক মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকে নতুন এমডি ও সিইও নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে সুপারিশ পাঠায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এই সুপারিশ গত ১৬ অক্টোবর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং ২০ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুমোদন করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button