পোশাক শিল্পে ৪৩ শতাংশ নারীই অপুষ্টির শিকার
দেশের বিভিন্ন শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বড় অংশ অপুষ্টির শিকার। শুধু তৈরি পোশাক শিল্পেই কর্মরতদের মধ্যে শতকরা ৪৩ জন নারী অপুষ্টিতে ভুগছেন। অপুষ্টির কারণে শ্রমিকের কর্মক্ষমতা ও উৎপদানশীলতা ২০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রমিকের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া জরুরি।
আজ মঙ্গলবার খুলনার সিটি ইন হোটেলে ’শ্রমিকদের জন্য বিদ্যমান পুষ্টিসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ প্রকল্প’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এই তথ্য তুলে ধরেন। শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রালয় আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তর আয়োজিত- এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়া এম.পি। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এ. কে. এম মিজানুর রহমান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, গেইন-বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, খুলনার ডিভিশনাল কমিশনার ইসমাঈল হোসেন, শ্রমও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের খুলনা ডিভিশনের পরিচালক মিজানুর রহমান প্রমূখ। অনুষ্ঠানে শ্রমিকদের পুষ্টির গুরত্ব বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশে-এর পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল।
বেগম মন্নুজান সুফিয়া বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত এবং উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা; তিনি ৪৮ বছর আগে পুষ্টি বিষয়টিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সে কারণেই জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শখ হাসিনা। সরকার প্রধান মনে করেন, অপুষ্টির কারণে সংঘটিত রোগব্যাধি ব্যক্তিজীবনে কর্মঘণ্টা হ্রাস ও আর্থিক ক্ষতিসাধন করে, যা সার্বিকভাবে জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত করে।
তাই অপুষ্টির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রমিকের নিরাপদ খাবার ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এছাড়া যারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবারহ ও বিপনন এর সঙ্গে জড়িত তাদেরকেও নিরাপদ ও পুষ্টির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ও বিশ্বের নানা গবেষণা অনুযায়ী- শ্রমিকের যথাযথ পুষ্টি জাতীয় উৎপাদনশীলতা ২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশ দগুলোর উত্পাদনশীলতার ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমিয়ে দেয়। আলোচনায় বক্তারা-পুষ্টির ক্ষেত্রে টেকসই ও ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য একটি এ্যালাইন্স (Alliance) তৈরি করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।