sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

পিরামিডের নিচে পাঁচ হাজার বছর আগের নৌকার খোঁজে

 বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো সভ্যতাগুলোর একটি গড়ে উঠেছিল মিশরে। সেখানকার নানা নিদর্শন থেকে ইতিহাসের সেসব নমুনা এখনো পাওয়া যায়।

সারা বিশ্বের কাছে মিশরের আরেকটি পরিচিতি তাদের পিরামিডগুলোর কারণে, যেগুলো বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়।

মিশরের প্রাচীন রাজাদের মৃত্যুর পর এসব পিরামিডের ভেতর সমাহিত করা হতো। যেভাবে এসব শরীর মমি করে পিরামিডের ভেতর রাখা হতো, তাতেই বোঝা যেত যে এই সভ্যতা কতটা উন্নতি করেছিল।

পিরামিড দেখার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক মিশরে আসেন
পিরামিড দেখার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক মিশরে আসেন ।

কিন্তু ইদানীং সেই পিরামিডের এলাকা, গিজা মরুভূমির মধ্যে আরো কৌতুহলীদ্দীপক একটি গবেষণা শুরু হয়েছে। তা হল, খুফু পিরামিডের নিচে লুকিয়ে থাকা পাঁচ হাজার বছর আগের একটি নৌকা বের করে আনা।

জাপানের ওয়াসেডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সেখানে একটি ল্যাব তৈরি করে এই কাজ করছেন। একেকটি টুকরো বের করে আনতেই কখনো একেকটি সপ্তাহ পার হয়ে যাচ্ছে।

মিশরের রাজাদের সমাধিস্থান পিরামিডের নিচ থেকে এটি দ্বিতীয় নৌকা বের করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৫৪ সালে আরেকটি নৌকা বের করে গিজা জাদুঘরে রাখা হয়েছে।

নৌকার টুকরা উদ্ধারের পর এই ল্যাবে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়
নৌকার টুকরা উদ্ধারের পর এই ল্যাবে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়।

কেন এসব নৌকা পিরামিডের নিচে?

প্রাচীন মিশরের লোকজন বিশ্বাস করতো যে, মৃত্যুর পর পুনর্জন্ম হবে এবং তারা স্বর্গ বা নরকে যাবে।

কিন্তু সেই যাতায়াতে ফারাহ রাজাদের নৌকা দরকার হতে পারে।

এ কারণেই রাজাদের সমাধির প্রস্তুতির সময় পিরামিডের নিচে বৃহৎ আকারের নৌকা স্থাপন করা হতো, যাতে করে তারা পরজগতে চলাফেরা করতে পারেন।

গিজা মরুভূমির ভেতর পিরামিডের নীচ থেকে প্রাচীন নৌকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে
 মরুভূমির ভেতর পিরামিডের নীচ থেকে প্রাচীন নৌকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

কীভাবে চলছে নৌকা উদ্ধারের কাজ?

গবেষকরা চেষ্টা করছেন, নৌকার প্রতিটি অংশ বা টুকরা আলাদাভাবে কিন্তু অক্ষত অবস্থান বের করে আনার।

মাটির নিচ থেকে এসব টুকরা বের করে এনে পুনরায় জোড়া লাগানো হবে।

গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক হিরোমাসা কুরোচি বলছেন, নৌকাটির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর, ফলে এটি বের করতে খুবই সতর্কতা নিতে হচ্ছে। পুরো কাজটি শেষ হতে অনেক সময় লেগে যাবে।

উদ্ধার করা নৌকার কিছু টুকরা
উদ্ধার করা নৌকার কিছু টুকরা।

আরেকজন গবেষক ইসা যিদান বলছেন, একেকটি টুকরা বের করে আনার পরই ল্যাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব টুকরা খুবই ভঙ্গুর, কারণ এগুলো মাটির নিচে হাজার বছর ধরে পড়ে ছিল।

এজন্য বিশেষভাবে ল্যাবটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিশেষ একটি তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ধরে রাখা হয়। একেকটি টুকরা ওজন করার পর সেটি সাবধানে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

এই গবেষকরা শুধুমাত্র এসব টুকরা জোড়া লাগিয়ে আবার সেই প্রাচীন নৌকাটি তৈরি করার চেষ্টাই করছেন না। বরং তারা ইতিহাসের হারানো কিছু গল্প খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

বিবিসি বাংলা।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button