পিপিই সংকটে পলিথিন ব্যাগ পরা তিন নার্স করোনা আক্রান্ত
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) সংকটের কারণে বর্জ্য ফেলার পলিথিন ব্যাগ পরে দায়িত্ব পালন করা যুক্তরাজ্যের তিন নার্স করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। হ্যারোর নর্থউইক হাসপাতালের এই তিন নার্স সপ্তাহ খানেক আগে বর্জ্য ফেলার পলিথিন ব্যাগ গায়ে জড়িয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য যাওয়ার সময় ছবি তোলেন এবং শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম মেট্রোর প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তিন নার্স জানিয়েছেন পিপিই না থাকার কারণে তারা বর্জ্য ফেলার পলিথিন ব্যাগ পরতে বাধ্য হয়েছিলেন।
একজন নার্স পিপিইর গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেক তরুণ বয়সীরা করোনায় আক্রান্ত। তারা কাশি বন্ধ করতে পারছেন না। তাদের নিঃশ্বাস নিতে আমরা খুব সামান্যই সহযোগিতা করতে পারছি। কাশতে কাশতে এক সময় শরীর আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না, আর তারা মৃত্যু মুখে ঢলে পরছেন। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো আমরা তাদের পরিবারের মানুষদের বিদায়ের জন্যও ডাকতে পারছি না।’
সাহসিকতার সঙ্গে হাসিমুখে কাজ করে যাওয়া প্রতিটি নার্স ভেতরে ভেতরে ভীষণ আতঙ্কিত বলেও জানান তিনি। বেশির ভাগ চিকিৎসাকর্মী সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে পরিবারের সঙ্গেও দেখা করছেন না।
ওই তিন নার্স টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, হাসপাতালে পিপিইর ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়ায় তারা ময়লা ফেলার পলিথিনের ব্যাগ পরে করোনা রোগীদের সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এছাড়া তাদের কাছে আর কোনো বিকল্প উপায় ছিল না।
তারা বলেন, হাসপাতালে পিপিই নেই। আমাদের সহকর্মীরা যথাযথ পিপিই ছাড়া সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এটা আমরা জানতাম। পিপিই আমাদের জন্য খুবই দরকার। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে পলিথিন পরেই রোগীদের সেবা দিতে হয়েছে।
রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হাসপাতালে সেবা দেওয়া প্রায় ১৪ দশমিক ছয় শতাংশ চিকিৎসক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ব্রিটেনের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের (আরসিপি) একটি জরিপ বলছে, দেশটিতে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ।