মো.নজরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ: আজ সোমবার ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। অর্থাৎ মহান আল্লাহর হাবিব আখেরি নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মানিকগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে সকালে উক্ত কর্মসূচি উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জুনিয়র লাইব্রেরীয়ান হালেমা মুন্নীর সভাপতিত্বে কোরআন থেকে পাঠ করেন মাওলানা আবু দাউদ। প্রধান বক্তা ছিলেন মনোয়ারা ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার এর গবেষক মুফতি হাবিবুল্লাহ। বিশেষ আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন মুফতি মনিরুজ্জামান, বেগম রোকেয়া গণ পাঠাগার এর নির্বাহী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, লাইব্রেরি সহায়ক সাইদুর রহমান পাপ্পু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন আমরা নবীর সত্যিকার সাম্যবাদী মানবতাবাদী আদর্শের দিক্ষা নিয়ে জীবন ও সমাজ বিনির্মানের প্রত্যয় করি। উল্লেখ্য যে-৫৭০ খ্রিস্টাব্দের তৃতীয় মাস রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখে মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলো করে বিশ্বনবী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আবদুল্লাহ। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। জন্মের আগেই রাসুল (সা.) তাঁর বাবাকে হারান এবং ছয় বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। বিশ্বজগতের রহমত হিসেবে মহান আল্লাহ তাআলা রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন। এ কারণে তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ বলা হয়। সারা পৃথিবীর মুসলিমদের কাছে দিনটি অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তাওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সে সময় আরবের সমাজ ছিল পৌত্তলিকতা, ঘোরতর অন্যায়-অবিচারের অন্ধকারে নিমজ্জিত। ‘আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগ’ বলে সেই সময়টিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই অন্ধকার যুগে মহানবী (সা.) এসেছিলেন আলোকবর্তিকার মতো। শৈশব থেকেই তিনি তাঁর সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, বিচক্ষণতাসহ অনুপম চারিত্রিক গুণাবলি, অপরিমেয় দয়া-সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতার মতো মহৎ গুণের জন্য আরব সমাজের সবার কাছে শ্রদ্ধাভাজন হয়ে উঠেছিলেন। নবুয়ত লাভের আগেই ‘আল-আমিন’ অভিধায় তাঁকে সম্মানিত করেছিল আরব সমাজ। হেরা পর্বতের গুহায় গভীর ধ্যানে নিমগ্ন থেকে তিনি ৪০ বছর বয়সে ওহি লাভ করেন। এরপর পরম করুণাময় আল্লাহর নির্দেশে দীর্ঘ ২৩ বছর কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও সীমাহীন ত্যাগের মাধ্যমে শান্তির ধর্ম ইসলাম তথা পবিত্র কোরআনের বাণী প্রচার করেন। আল্লাহর প্রতি অসীম ও অতুলনীয় আনুগত্য এবং ভালোবাসার পাশাপাশি মহত্ মানবিক চারিত্রিক গুণাবলির জন্য তিনি সর্বকালে সর্বজনের কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে অভিষিক্ত।