
জ.ই. আকাশ, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) : পদ্মা যমুনা অববাহিওকায় অব্যহত পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, এ উপজেলার পদ্মা যমুনা অববাহিকায় প্রবাহিত একমাত্র শাখা নদী ইছামতী। প্রতিদিন পানি বৃদ্ধিতে ইছামতী যেন ভরা যৌবনে ফিরে এসেছে। এতে করে ইছামতীর সংযোগ খাল দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের মাঠে পানি প্রবেশ করছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিন্দু মরিচের ক্ষেতে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক। ক্ষেতে পানি প্রবেশ করায় অনেকেরই মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। দ্রুত পানি আসায় মরিচের আমদানীও যেন অনেকটাই কমে গেছে হাট বাজারেও। এর ফলে বাজারে মরিচের দামও অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার ঝিটকা বাজারের মরিচের আড়ৎদাররা জানান, “ক্ষেতে পানি আসায় মরিচের আমদানী অনেকটাই কমে গেছে। ফলে ৪/৫ দিন আগে যে মরিচ ১৭/১৮ টাকায় কিনেছি। এখন তার দাম ৩৭/৩৮ টাকা। মরিচের আমদানী যত কমবে, দামের পরিমাণও তত বাড়বে।”
উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা উজানপাড়া গ্রামের কৃষক বারেক জানান, “ক্ষেতে পানি চইলা আইছে। ২/৩ দিনের মধ্যেই গাছ মইরা যাইব। এ বছরের মতো মরিচের আবাদ শেষ। তারাতাড়ি পানি আসায় মরিচ চাষীদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।”
মাচাইন গ্রামের মোশারফ হোসেন জানান, “আমি তিন পাখি মরিচ চাষ করেছিলাম। সব ক্ষেতেই পানি উঠে গেছে। নতুন অনেক সাজ এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ কইরা পানি আসায় এখন আর গাছই বাঁচবো না।”
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গফফার জানান, “এ উপজেলায় সর্বমোট ১২৮৫ হেক্টর জমিতে বিন্দু ও কারেন্ট মরিচের আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে আবাদ হয়েছে ১৬৬৫ হেক্টর জমি। এ বছর মরিচের ফলনও অনেক ভাল হয়েছিল। দামও ছিল বেশ ভালই। কিন্তু দ্রুত বন্যার পানি প্রবেশ করায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক।”
পানি বৃদ্ধির ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, “পদ্মা যমুনা অববাহিকার আরিচা পয়েন্টের পানি বর্তমান বিপদসীমার দেড়মিটার নীচে থাকলেও প্রতিদিন প্রায় ২০ সে.মি. পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ১ সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যহত থাকার সম্ভবনা রয়েছে।”