এম এ কাইয়ুম চৌধুরী,শিবালয় প্রতিনিধি: পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট ও ডুবোচরের কারণে হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাটে প্রতিদিনই আটকা পড়ছে পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ। বিশেষ করে আন্ধারমানিক ঘাটে প্রতিদিনই চট্টগ্রাম, মোংলা, সিলেট, কুতুবদিয়া ও নারায়ণগঞ্জ বন্দর থেকে আসা পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ আটকা পড়ছে। এতে করে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ী ও জাহাজ মালিকরা। তাই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের।
বর্ষার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর থেকে সিরাজগঞ্জের লতিফপুর পর্যন্ত নৌপথের অন্তত ৬ থেকে ৮টি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নৌপথে পানির গভীরতা কম থাকায় বাধ্য হয়ে জাহাজ থেকে সার, কয়লা, ক্লিংকার, পাথর ও খাদ্যপণ্য খালাস করে তা ছোট ছোট বাল্কহেডের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে পাবনার নগরবাড়ী, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌবন্দরে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বেড়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কোস্টার জাহাজের মাস্টার রহমান শেখ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কয়লা লোড দিয়ে পাবনার নগরবাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। কিন্তু নদীতে পানি কম হওয়ায় আমরা হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাটে তিনদিন যাবৎ আটকা আছি। এখন মালামাল বাল্কহেডের মাধ্যমে কমিয়ে তারপর আবার রওনা হবো। এতে লোড আনলোডে প্রচুর সময় ও বাড়তি টাকা লাগবে।
আটকে পড়া আরেক জাহাজের মাষ্টার ইদ্রিস আলী জানান, আমরা তিনদিন যাবৎ এখানে আটকে আছি। নদীতে পানি কম থাকায় ইউরিয়া সারগুলো সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি সময়মত পৌছাতে পারছিনা। তাই বাধ্য হয়ে বাল্কহেডের মাধ্যমে একটি অংশ সেখানে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিবছর এই মৌসুমে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হয়। নদীতে পানির গভীরতা বেশি হলে এই সমস্যা হতো না। প্রতি বস্তা ইউরিয়া পাঠাতে আমাদের ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি লাগছে।
আন্ধারমানিক ঘাটের ট্রলার চালক হাশেম জানান, প্রতি বছর এই সময়টা এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ডুবোচর জেগে উঠে। ফলে নৌযান চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড়মাস যাবৎ এখানে ১৫ থেকে ২০টি জাহাজ ভিড়ে আছে।
নৌপথের সংকট নিরসনে দ্রুত ড্রেজিং কার্যক্রমের আশ্বাস দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। মানিকগঞ্জ বিআইডব্লিউটি এর আরিচা কার্যালয়ের ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমাদের এখানে হাইড্রোগ্লিফিক জরিপ হয়েছে। এখন অনুমোদনের অপেক্ষা। অনুমোদন হলেই আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে ওখানে দুইটা ড্রেজার বসাবো।