ফিচারশিরোনাম

নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর সাপাহার জবই বিল

শামীনূর রহমান শামীম : নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার পশ্চিমে শিরন্টি, গোয়ালা ও আইহাই, পাতাড়ী এই ৪ ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে জবাই বিল। অপার নিসর্গের এই বিলের প্রকৃত নাম দামুর মাহিল বিল। কিন্তু এটি জবাই গ্রামের কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়ায় পরে এর নামকরণ হয় জবাই বিল।
এখানে এলে দেখতে পাবেন এলাকার সীমানাজুড়ে ফাঁকা মাঠ। বিলের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে প্রায় এক কিলোমিটার পিচঢালা পথ। তার দুই পাশে ইট-সিমেন্টের লাল-সাদা রং করা খুঁটি। যেন প্রকৃতির এক অপরূপ দৃশ্য বহন করছে জবাই বিল ও তার উপর নির্মিত এই ব্রিজটি। ব্রিজের ওপর রাতে দাঁড়ালে চোখে পড়বে ভারত সীমান্তে জ্বলে থাকা সোডিয়াম বাতির হলুদ আলো। এ যেনো আলো-আঁধারের অপরূপ খেলা।

ছবি : মারশাল টিটু।
সাপাহার জবাই বিল
বর্ষা মৌসুমে অত্যন্ত সুন্দর রূপ ধারণ করে এই জবাই বিল। কোথাও উঁচু-নিচু জায়গায় জমে থাকা পানিতে মাছ শিকারের অপেক্ষায় দু-একটি সাদা বক,মাছরাঙ্গা আর পানকৌড়ির দল। বর্ষায় এর নয়নাভিরাম দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। আর প্রতি বছর শীতের সময় হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে এখানে। অতিথি পাখির কিচিরমিচির ডাকহাঁক আর কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো বিল।
আবহমান বাংলার চির চেনা অপার সুন্দর দৃশ্য এটি। মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে চলা সুদর্শনীয় বিহঙ্গের দল আর তাদের ঝাঁক বেঁধে বিলের কোলে নেমে আসা। এখানে শামুকখোল, বক, কক, বালিহাঁস, চাহা, রাজহাঁস, পাতি সরালীসহ নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির কলতানে সব সময় মুখরিত থাকে বিলের সর্বত্র। এই বিলের ছোট ছোট মাছ আর শামুকই মূলত এসব পাখির প্রধান খাদ্য। বিলের এই অতিথি পাখির কলতান, মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে চলা, আবার বিলের পানিতে নেমে আসার অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে করতে কখন যে বেলা কেটে যাবে টেরই পাবেন না।

ছবি ৩
এই জবাই বিল মৎস্য উৎপাদনের একটি বড় উৎস। আর ৪০৩ হেক্টরের এই জবই বিলে নেয়া হয়েছে মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প। আগামী ২০২০ সাল পর্যন্ত মৎস্য অধিদপ্তর এই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও জৈববৈচিত্র সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মৎস্য অধিদপ্তর এই বিলে কাজ করে চলেছে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, আল নাফি ইত্যাদি বাস নওগাঁর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নওগাঁ পৌঁছানোর পর জেলা শহর হতে বাসযোগে সাপাহার যেতে হবে। বাসে সময় লাগবে আনুমানিক ২ ঘণ্টা থেকে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ।
যেখানে থাকবেন :
নওগাঁ সদরেও থাকার জন্য ভালো মানের অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে হোটেল আগমনী, হোটেল অবকাশ, হোটেল নীল সাগর,যমুনা, মল্লিক ইত্যাদি। এখানে ২৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন। এসিও রুমও পাবেন। সেক্ষেত্রে খরচ আরো কিছুটা বেশী পড়বে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button