sliderস্থানীয়

নিয়ামতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও স্যালাইন সংকট

জনি আহমেদ, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবার প্রাণকেন্দ্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও স্যালাইন সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান ভালো না হওয়ায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দিকে ঝুঁকছে রোগীরা।

এই সুযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। চিকিৎসক ও সরঞ্জামের অভাবে এবং অপ্রতুল ওষুধসহ নানা সমস্যায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। ৫০ শয্যার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞসহ মোট চিকিৎসক থাকার কথা ১৫ জন। এর বিপরীতে বর্তমানে আছেন ০৯ জন। আছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সংকট। অথচ ৫০ শয্যার বিপরীতে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি মাসে প্রায় ৮-১০ টি সিজারিয়ান অপারেশন হয়। এছাড়া হাসপাতালে এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফি, সেন্টাল অক্সিজেন প্লান্ট চালু আছে। তবে হাসপাতালে ওষুধের অপ্রতুলতা রয়েছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম।

শুধু চিকিৎসক নন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদেরও সংকট আছে। সহসেবক, হিসাবরক্ষক, কার্ডিওগ্রাফার, চালকসহ তৃতীয় শ্রেণির ৩৭ জন কর্মচারীর বিপরীতে আছেন ১৯ জন। অর্থাৎ ১৮ টি পদ ফাঁকা। চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, স্ট্রেচার বহনকারী ও ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পদে ১৯ জন থাকার কথা, আছেন মাত্র ১২ জন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৫, যা শয্যাসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। ওই দিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন ৪০০ জনের বেশি রোগী।

বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১৫ টি। সেখানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন। শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৩৫ টি। সেখানে রোগী রয়েছেন ৪৬ জন। শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানা পেতেছেন রোগীরা।
বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের লম্বা লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।
বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আসমা বেগম বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে আমাদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর চিকিৎসা মেলে। হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধ দেয়। বাহিরে দোকান থেকেও ওষুধ কিনতে হয়।

নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহবুব-উল আলম বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের মারাত্মক জনবল সংকট রয়েছে। প্রতিদিন ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ রোগী সামলাতে হয়, সেখানে জনবল অর্ধেকের মত। প্রতিটা সেক্টরেই জনবলের স্বল্পতা। এই জনবল নিয়েই আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সেবা দেওয়ার। হাসপাতালে যে গুলো ওষুধ থাকে সেগুলো ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়। সেগুলো ওষুধ হাসপাতালে থাকে না সেসব ওষুধ গুলো রোগীর স্বজনদের বাহিরের দোকান থেকে নিয়ে আসতে বলা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button