মাহবুব আলম চৌধুরী জীবন : চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংগঠন সেই সঙ্গে দেশের আপামর মানুষের ভালোবাসা ও দোয়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে প্রথমবারের মতো নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ইতিহাসের খাতায় নাম লেখালেন দুই বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল নাসরিন আক্তার নিপুণ।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতিষ্ঠার পর এর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। ওই বছরের ১১ই মে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসেন নায়করাজ রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ। শুরু থেকে আজ অবধি শিল্পী সমিতির ৩৮ বছর কালে পুরুষরাই এত দিন এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। চার দশকের ইতিহাসে এই প্রথমবার নিপুণ নারী হিসাবে সেক্রেটারি নির্বাচিত হলেন।
দুই বছরের জন্য এই পদে জয়ী হয়েছেন জনপ্রিয় এই তারকা। তবে এর জন্যে নিপুণকে পার করতে হয়েছে নানা নাটকীয়তা।
গেলো ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির (২০২২- ২০২৪) মেয়াদের নির্বাচনে নিপুণ ১৩ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। সূক্ষ্ম কারচুপি করে তার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন জায়েদ খান কিন্তুু নিজের পরাজয়কে সহজে মেনে নেননি নিপুণ। জায়েদ খানের বিরুদ্ধে তিনি অনিয়মের অভিযোগ আনেন নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে। নিপুণের সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে নিপুণ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে শিল্পী সমিতির প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী হলেন।
গত শনিবার (৫ই ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এফডিসিতে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। অনেক লড়াই করে জেতার পর নিজের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আবেগ সংবরণ করতে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে ভক্তদের উদ্দেশ্যে,
সত্যের জয় হয়েছে। আমার কাছে অনেক প্রমাণ ছিল। আমি অনেক ভাবে গিয়েছি পীরজাদার (নির্বাচন কমিশনার) কাছে তিনি আমাকে সহযোগিতা করেননি। সত্যের জয় হয়েছে আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার আর কিছু বলার নেই।
নিপুণ বলেন,
শিল্পী সমিতির ইতিহাসে প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার অনুভূতি জানান তিনি বলেন যে এটা সত্যি দারুণ এক ভালো লাগার ব্যাপার।
আমি খুবই আনন্দিত ৩৮ বছরের সমিতির ইতিহাসে নতুন ভাবে একজন নারীর নাম লিখতে পেরে। আশা করি ভবিষ্যতে হয়তো অন্য নারী শিল্পীরাও আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবেন।
নিজের প্রতিক্রিয়ায় নিপুণ আরও বলেন,আমি এই চেয়ারের জন্য নির্বাচনে আসিনি। আমি এসেছি আমাদের শিল্পী ভাই – বোনদের পাশে দাঁড়াতে।
খুব ভালো লাগছে এখন আমি শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে পারার শক্ত প্ল্যাটফর্ম পেলাম। এখন থেকে আমি শিল্পীদের বিরুদ্ধে অন্যায় হলে সেটার প্রতিবাদ করতে পারবো ও তাদের জন্যে কাজ করতে পারবো। আমি আমার পক্ষ থেকে প্রাণ ঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
নবাগত শিল্পী সমিতির সাধারন সম্পাদক মোছাঃ নাসরিন আক্তার (নিপুণ)’র জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শুভ কামনা নিরন্তর।
