রতন ঘোষ, কটিয়াদী প্রতিনিধি: ২৪ মে শুক্রবার নিজ বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার পথে নানার বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের আজলদী গ্রামে হেলিকপ্টারে করে তার সহধর্মিনী ফরিদা কবিরকে নিয়ে ড: হুমায়ুন কবির অবতরণ করেন। তাকে এক নজর দেখার জন্য হাজার হাজার লোক হেলিকপ্টারের পাশে এসে সমবেত হয়। হেলিকপ্টার থেকে নামার সাথে সাথে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তাকে ফুল দিয়ে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন।
ড:হুমায়ুন কবির কটিয়াদী উপজেলা থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান তিনি। ১৯৮৬ সালে তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম রিমোট কন্ট্রোল এইচ-ফাইভ হাইন্স হেলিকপ্টার আবিষ্কার করেন। সেখানে তিনি এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ডক্টরেট ডিগ্রী ও লাভ করেন। পরবর্তীতে যোগদান করেন আসটিভ্যাল অফ টেক্সাসে ঊর্ধ্বতন বোয়িং বিজ্ঞানী হিসাবে। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সাথে মেরিন কপ্টার ৬-২২ নৌবাহিনীর জন্য হেলিকপ্টার তৈরিতে সহযোগিতা করেন। এবং তিনি বোয়িং বিমান ও তৈরি করেন। সেখানে তিনি প্রায় ২৬ বছর অবস্থান করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি হলাম ড্রোনের প্রথম জনক। আজকাল ছোট ছোট বাচ্চারা পর্যন্ত ড্রোন উড়ায়। কিন্তু আমার ড্রোন সেটা অনেক বড় যা সরকার ব্যবহার করে। পরে যে হেলিকপ্টারটি আবিষ্কার করা হয়েছে সেটা সরকারও পাবলিক সবাই ব্যবহার করে। তবে সরকার এই হেলিকপ্টার দিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকা থেকে ৪৬ জন (বহন ক্ষমতা সম্পন্ন) লোক নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে আসে এবং এভাবে বারবার আসা যাওয়া করতে পারে। সে সময় তিনি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“আমি যদি করতে পারি তোমরা ও পরিশ্রম করলে করতে পারবে । মানুষের অসাধ্য কোনো কিছু নেই, পরিশ্রমেই সবকিছু সম্ভব। কোন কিছুই আকাশ থেকে পড়ে না, চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব”। তিনি আরো বলেন প্রথম যে রিমোট কন্ট্রোল ড্রোন আবিষ্কার করেছি সেটাকে কেন্দ্র করে এখন পৃথিবীর সব দেশেই ড্রোন তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন আজ যে আমার কি খুশি লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখানে কয়েকদিন থেকে পড়ে যাব নিজ বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের নাগেরগাঁও গ্রামে। এবার তিনি বাংলাদেশে এক মাস থাকবেন বলে জানান। একমাত্র ছেলে সন্তানের জনক ডক্টর হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ২০০৪ সনে তিনি প্রথম আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। আজ আবার ২০ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি আমার শেষ জীবনে নিজের জন্মভূমির জন্য কিছু করে যেতে চাই।