sliderখেলা

‘নিজের ঢোল নিজেই পেটালেন’ রোনালদো

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতে মেসিকে ছুয়ে ফেলেছেন পর্তুগিজ স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এরপরই শুরু হয়ে যায় মেসি ও রোনালদোর তুলনা। কে সেরা মেসি নাকি রোনালদো? স্বাভাবিকভাবেই এ প্রশ্নটি করা হয় রোনালদোকে, জবাবে বলেন, মেসির চেয়ে তিনিই সেরা।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিশ্বের সেরা ফুটবলার হিসেবে পর্তুগিজ অধিনায়কের নাম ঘোষণা করে ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’। প্রতিযোগিতায় তিনি পেছনে ফেলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বার্সেলোনা তারকা মেসি এবং পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারকে।
পুরস্কার পেয়ে টুইটারে রোনালদো লিখেন, ‘আর একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। অবিশ্বাস্য অনুভূতি। এত বছর ধরে আমার পাশে থাকার জন্য আমার পরিবার, বন্ধু, সতীর্থ, কোচ এবং প্রত্যেককে ধন্যবাদ।’
রোনালদোর কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল বিবিসি স্পোর্ট। তাদের প্রশ্ন ছিল, রোনালদো কি নিজেকে মেসির চেয়ে ভালো খেলোয়াড় মনে করেন?
উত্তরে রোনালদো বলেন, ‘এটা যার যার অভিমত। আমি তাদের মতামতকে সম্মান করি। অনেকের মতে, মেসি আমার চেয়ে ভালো খেলোয়াড়। কিন্তু আমার মতে, আমি তার চেয়ে সেরা। আমি ভীষণ খুশি, আমার প্রাপ্তি নিয়ে। এসব পুরস্কার এজন্যই পেয়েছি, কারণ, আমি মাঠে অবিশ্বাস্য ভালো খেলি। আর এ কারণেই মানুষ আমাকে এত পছন্দ করে।’
শুধু মেসির চেয়ে সেরা নয়, সর্বকালের সেরা হিসেবেও নিজেকে দাবি করেন রোনালদো। ফ্রান্স ফুটবল’ ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘খারাপ কিংবা ভালো, যেকোনো সময়ের বিচারেই আমি সর্বকালের সেরা ফুটবলার।’
তিনি আরো বলেন, ‘সবার পছন্দের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, কোনো ফুটবলারকে আমার চেয়ে ভালো খেলতে দেখিনি। আমি যা করতে পারি, তা কেউই করতে পারে না। আমার চেয়ে সম্পূর্ণ কোনো ফুটবলার নেই। আমি দুই পায়েই খেলতে পারি। আমি দ্রুত, শক্তিশালী, হেডে ভালো, গোল করি এবং করাই। অনেকেই নেইমার বা মেসির নাম বলবেন, কিন্তু আমি বলছি, কেউই আমার চেয়ে সম্পূর্ণ নয়।’
রোনালদো বলেন, ‘আমি মেসির আগে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলাম, এরপর সে আমাকে টপকে টানা চার বছর জিতেছে। আমি লুকাব না, সে সময় আমি দুঃখি ও রাগান্বিত ছিলাম। হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। শুধু ছবি তোলার জন্য সেখানে যাওয়ার আগ্রহ আমার ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি নিজেকে বলেছিলাম, জীবনে যা কিছুর শুরু হয়, তার শেষও রয়েছে। আর ফুটবলে শেষটাই গুরুত্বপূর্ণ। ধৈর্য ধরেছি এবং আমি আরো চারটি ব্যালন ডি’অর জিতেছি।’
এ বছর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মোট ২৫টি গোল করেছেন রোনালদো। আর জিতেছেন চারটি শিরোপা। তাই পঞ্চম ব্যালন ডি’অর পাওয়াটা তার জন্য প্রায় নিশ্চিত ছিল।
গত মৌসুমে রিয়ালের লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল এই ফরোয়ার্ডের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নকআউট পর্বে ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করার পাশাপাশি কীর্তি গড়েন নকআউট পর্বে টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার।
গত মে মাসে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন ক্লাবের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো। এ বছরে জাতীয় দলের হয়েও দারুণ ছন্দে ছিলেন তিনি। আগামী বছর হতে যাওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপে দলকে তুলতে বাছাইপর্বে শেষ ছয় ম্যাচে একটি হ্যাটট্রিকসহ আটটি গোল করেছেন।
২০০৮ সালে প্রথমবার ফিফার বর্ষসেরা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জিতেছিলেন এই মাদ্রিদ তারকা। দুটি পুরস্কার একীভূত হওয়ার পর ২০১৩ ও ২০১৪ সালের ফিফা ব্যালন ডি’অর জেতেন। পুরস্কার দুটি আলাদা হয়ে যাওয়ার পর গত বছর ব্যালন ডি’অর ও ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ পুরস্কারও জিতেছিলেন রোনালদো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button