জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ভাঙচুরের কারণে জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ গাজীপুরের সাফারি পার্কটি বন্ধ ছিল দীর্ঘ ৩ মাস ১১ দিন। এতদিনে পুরোপুরি মেরামত কাজ শেষ না হলেও পর্যটন মৌসুম বিবেচনায় দর্শনার্থীদের উপযোগী করে পার্কটি খুলে দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে এটি সকলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক’এর নাম বদল করে ‘সাফারি পার্ক, গাজীপুর’ নামে নতুন করে এটি যাত্রা শুরু করল। যদিও এর নাম পরিবর্তনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ।
গত ৫ আগস্ট পার্কটিতে হামলা চালিয়ে মূল ফটক, শেখ মুজিবুর রহমানের মুরাল, প্রাণি জাদুঘর, পাখিশালা ও পার্ক অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। লুটপাট করা হয় নানা সরঞ্জাম। এমন বাস্তবতায় বন্ধ রাখা হয় এটি। টানা মেরামত কাজ করে খুলে দেয়ার খবরে আসতে শুরু করেছেন বিনোদনপ্রিয় ও প্রকৃতিপ্রেমী লোকজন।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, সেদিন পার্কে ভাঙচুর ও লুটপাটে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফলে ওই দিনই অনির্দিষ্টকালের জন্য এটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর টানা সংস্কারকাজ চালানো হয়েছে। কিছু কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবু দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হলো। বাকি চারটি বিভাগও শিগগিরই সংস্কারকাজ শেষে খুলে দেয়া হবে। স্থানীয় লোকজনের দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমানে এটির প্রস্তাবিত নাম হলো গাজীপুর সাফারি পার্ক।
তিনি বলেন, এখন থেকে নিয়মিত খোলা থাকবে পার্কটি। পার্কের মূল ফটকসহ বিভিন্ন অংশের ইজারা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইজারা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় পার্কের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সাফারি পার্কের বন্ধ থাকা চারটি বিভাগ ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম, প্রজাপতি কর্নার, ফেন্সি ডার্ক গার্ডেন ও শিশু পার্ক সংস্কারকাজ শেষে শিগগিরই খুলে দেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, পার্কের প্রবেশ ফি জনপ্রতি ৫০ টাকা। সকালে পার্কটি খুলে দেওয়ার পর প্রায় এক ঘণ্টায় ২০-৩০ জন দর্শনার্থী প্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অনেকেই জানেন না, পার্কটি খুলে দেওয়া হয়েছে। পার্ক খোলার বিষয়টি প্রচার হলে দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়বে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বড় রাথুরা মৌজা এবং সদর উপজেলার পীরুজালী ইউনিয়নের চার হাজার ৯০৯ একর বনভূমি ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত এ সাফারি পার্ক। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১০ একর এলাকাকে সাফারি পার্কের মাস্টার প্ল্যানের আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি