sliderস্থানীয়

নাটোরে ১০ ফুট নিচে পুঁতে রাখা যুবকের মরদেহ উদ্ধার, প্রেমিকা গ্রেফতার

নাটোর প্রতিনিধি : নিখোঁজের ৫ দিন পর নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় একটি বাড়ির আঙ্গিনায় মাটির ১০ ফুট নিচে পুঁতে রাখা শাহীন শাহ (৪০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার জলন্দা গ্রামে পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ি থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শাহীন শাহ নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের দস্তানাবাদ এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে। শাহীন বিবাহিত ও নাটোর কোর্টে উকিলের মুহুরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনায় হোসনে আরা (৩৫) নামে এক নারী ও তার চৌদ্দ বছর বয়সী ছেলে সন্তানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত হোসনে আরা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জলন্দা গ্রামের প্রবাসী আইয়ুব আলীর স্ত্রী। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।

পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, গত ৬ মাস আগে নাটোর কোর্টে তিন সন্তানের জননী হোসনে আরার সাথে মহুরী শাহীন শাহ’র পরিচয় হয়। এরপর থেকেই তারা উভয়েই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশের ধারণা, কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে চলমান পরকীয়া সম্পর্কের অবনতি হয়। পরে হোসনে আরা হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৭ আগস্ট পরকীয়া প্রেমিক শাহীন শাহকে নিজ বাড়ীতে ডেকে নেন। এরপর হোসনে আরা তাকে চেতনা নাশক ঔষধ মিশ্রিত খাবার খাওয়ালে অচেতন হয়ে পড়ে শাহীন। এরপরে হোসনে আরা প্যান্টের বেল্ট দিয়ে শাহীনকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর হোসনে আরা টিউবওয়েল মেরামতের অজুহাতে দুইজন লোককে দিয়ে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় মাটির ১০ ফুট গর্ত করিয়ে নেন। এরপর সুযোগ বুঝে ছেলের সহায়তায় তিনি শাহীনের মরদেহ ওই গর্তে পুঁতে রাখেন। ১১ আগস্ট মরদেহ উদ্ধার কালে শাহীনের মুখ, হাত ও পা বাঁধা এবং গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় ছিল।

এর আগে গত ৭ আগস্ট শাহীন বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার চাচা আকতার হোসেন নাটোর সদর থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরী করেন। এছাড়া নাটোর র‌্যাব ক্যাম্পে নিখোঁজ সংক্রান্ত আরো একটি অভিযোগ করা হয়। এরপরেই অভিযানে নামে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ হোসনে আরাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ফিরোজ শাহ বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় দুই জন নামীয় ও দুই জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত হোসনে আরা ও তার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। শনিবার দুপুরের পর গ্রেফতার কৃতদেরকে আদালতে নেওয়া হবে। এছাড়া অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ বলেও জানান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button