
নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দীনকে (মরণোত্তর) একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক নাটোরের লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দীন (মরণোত্তর) কে সরকার একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় নাটোরের মানুষ উচ্ছাস প্রকাশ করেছে। মমতাজ উদ্দীনকে সরকারের একুশে পদক দেয়ার ঘোষণার খবর জেনে তার ভাই সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেফালী মমতাজ, তার ছেলে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা নাটোরের বর্তমান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এই পদক পাওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসকও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে তারা জানান। উপসচিব বাবুল মিয়া স্বাক্ষরিত এবারের একুশে পদক প্রাপ্ত ১৯জনের তালিকায় মমতাজ উদ্দীনের নাম প্রকাশের পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মমতাজ উদ্দীন লালপুর উপজেলার আব্দুলপুর মিল্কিপাড়ায় ১৯৪৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্থানীয় চক নাজিরপপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি, নাটোর নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং ঈশ্বরদী কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে ডিগ্রি পাস করেন। তিনি লালপুর থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিব বাহিনীর কমান্ডার নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তিতে তিনি লালপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাদাসিধে জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই মানুষটি স্থানীয় সালামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন। ২০০৩ সালের ৬ জুন রাতে একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন তিনি। তার মৃত্যুর ১০ বছর পরে ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ তার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। এই নেতাকে সরকার (মরণোত্তর) একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় তার নির্বাচনী এলাকা লালপুর বাগাতিপাড়াসহ নাটোর জেলার সর্বস্তরের মানুষ উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন।