নগরকান্দায় চোর সন্দেহে ৮৩ বছরের বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা

বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের নগরকান্দায় অটোভ্যান চোর সন্দেহে বিল্লাল গাজী নামে ৮৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের শংকরপাশা এলাকার স্বপ্নছোয়া কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের সামনে সড়কের পাশ থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অটোভ্যান চোর সন্দেহে একই এলাকার গোয়ালপোতা গ্রামের বাসিন্দারা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত বিল্লাল গাজী খুলনার পাইগাছা উপজেলার লক্ষীখুলা গ্রামের মৃত শহর আলী গাজীর ছেলে।
স্থানীয় রুবেল হোসেন বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে বয়সের ভারে কোনো দিকদিশা না পেয়ে মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে গোয়ালপোতা গ্রামের লতিফ মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন বিল্লাল গাজী। পরে বাড়ির ওঠানে রাখা একটি অটোভ্যানের উপর বসেছিলেন। কিন্তু লতিফের বাড়ির লোকজন মনে করেছে তিনি ভ্যান চুরি করতে এসেছেন।
এ সময় লতিফের পরিবার তাকে জিজ্ঞাসাদ করলে তিনি বয়সের কারণে ঠিকমতো উত্তর দিতে পরেননি। একপর্যায় ঘটনাটি আশাপাশের বাসিন্দারা জানতে পেরে ওই বাড়িতে জড়ো হন। পরে গ্রামবাসী মিলে বিল্লালকে কিল-ঘুষ ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তার লাশ পাশের শংকরপাশা এলাকার সড়কের পাশে বাগানের ভেতর ফেলে রেখে দেয়।
তবে লতিফ মণ্ডলের দাবি তাকে হত্যা করা হয়নি। তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধা ভ্যান চুরি করতে এসেছিল। পরে তাকে গ্রামবাসীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন গ্রামের লোকজন তাকে কি করেছে আমরা জানি না। আমাদের ধারনা তিনি এমনিতেই মারা গেছেন।
ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, আমি সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে বৃদ্ধার লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। তবে কিভাবে মারা গেছে আমি জানি না।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বৃদ্ধা লোকটি যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ তার শরীরের অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাক-মুখ ছিল রক্তাক্ত। তবে হত্যার ঘটনাটি থামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো.আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, খবর পেয়ে এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অনেক কিছুই শোনা যাচ্ছে। কিভাবে কি হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রির্পোট আশার পর মৃত্যুর কারণ আরও ক্লিয়ার হওয়া যাবে।