
ধামরাই প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ের প্রত্যাশা-বাছট গাজীখালি নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দু’টি উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ। ধামরাই উপজেলার বালিয়া, গাংগুটিয়া ও পার্শ্ববর্তী সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা এখন বাঁশের সাঁকো ও খেয়া নৌকা। সারা বছরই স্থানীয় তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় খেয়া নৌকায় পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলা সদরসহ কাওয়ালিপাড়া বাজারে যেতে হচ্ছে। গাজীখালি নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দাবি জানিয়ে এলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। ফলে অবহেলিত ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষি পণ্য ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে কেনা-বেচা করতে পারছেন না। বিভিন্ন সময় নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কেউ বাস্তবায়ন করেননি। ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বাছট বৈতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিজান জানান, ধামরাই উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল বালিয়া, গাংগুটিয়া ও সাটুরিয়া উপজেলা সীমান্ত ঘেঁষা গাজীখালি নদী দ্বারা বিভক্ত। এ নদীর উপর স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরেও কোনো সেতু গড়ে ওঠেনি। নদীর পশ্চিমপাড়ে রয়েছে বাছট বৈতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পূর্ব পাড়ে রয়েছে প্রত্যাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ নিয়ে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। অনেক সময় সাঁকো থেকে পড়ে শিক্ষার্থীরা আহত হন। ধামরাইয়ের প্রত্যাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার জানান, দু’টি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যে বাছট, বৈলতলা, মোকদমপাড়া, সেখরীনগর, প্রত্যাশা, ভাবনহাটি, রামরাবন, কাওয়ালিপাড়া, গাংগুটিয়ার অর্জুনালাইসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষকে চরম কষ্টের মধ্যদিয়ে নদীর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ও খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে সারা বছর চলাচল করতে হচ্ছে। এতে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে উপজেলা সদর ও কাওয়ালিপাড়া বাজারে যাওয়ার জন্য প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে যেতে হয়। ওইসব এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য স্থানীয় কাঁচাবাজারে পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। শুধু গাজীখালি নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে তাদের এ দুর্ভোগের শেষ নেই। গাজীখালি নদীতে একটি সেতু নির্মিত হলেই কয়েকটি ইউনিয়নের শিক্ষার্থী, কৃষকসহ লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছি আমরা। দ্রুত নদীতে সেতু চান তারা। বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, প্রত্যাশা-বাছট নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলাবাসীর দুর্ভোগই লাঘব হবে। ওইখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে তাগাদা দেয়া হবে। ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. আজিজুল হক বলেন, গাজীখালি নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করা হবে।