ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আকরাম হোসেন নামে এক কলেজছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, তাকে মারধরের পর বিষ খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার নিহত কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বাঘাইর গ্রামে।
সরেজমিনে জানা গেছে, ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ কেলিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল হান্নানের ছেলে আকরাম হোসেন ধামরাই পৌরসভার আমিন মডেল টাউন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে গত দেড় মাস আগে পুলিশ কনস্ট্রেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষাও দিয়েছে। আকরাম হোসেন ধামরাইয়ের বাঘাইর গ্রামে তার নানার বাড়ির পাশের আব্দুর রশিদের মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী হুমাইরা আক্তার রুবার সঙ্গে গত এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে কথাও হয়। কিন্তু আকরাম হোসেনের চাকরি না হওয়ায় হুমাইরার পরিবার তার সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ার কথা জানিয়ে গত এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
আকরাম হোসেনের মামা জামিল হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার আকরাম আমাদের বাড়িতে আসে। এরপর সন্ধ্যায় হুমাইরার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আকরাম হোসেনকে হুমাইরার চাচাতো ভাই মোতালেব আমাদের বাড়ির উঠানে মুর্মুর্ষ অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এরপর আকরামকে উদ্ধার করে সাভারের গণ স্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে মারা যায়।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগ্নেকে রুবার চাচাতো ভাই মোতালেবসহ তার স্বজনরা মারধর করে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এদিকে হুমাইরার মা জায়েদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আকরাম হোসেনের সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে পুলিশে চাকরি না হওয়ায় গত ঈদুল ফিতরের পর থেকেই তার সঙ্গে যোগাাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে তার মৃত্যুর বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
অপর অভিযুক্ত মোতালেব হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অনেক দুরে আছি। তবে আকরাম হোসেনের মৃত্যুর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় সাহা বলেন, গণ স্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আকরামের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।