ধর্ষণের অভিযোগ নারীর, ‘গালগল্প’ বললেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। তবে ট্রাম্প এ অভিযোগকে নিতান্তই ‘গালগল্প’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
ই. জিন ক্যারোল নামের ওই নারী গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানান, ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি নিউইয়র্কের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ড্রেসিং রুমে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন ট্রাম্প।
অবশ্য ট্রাম্প বলছেন, ক্যারল তাঁর নিজের ‘একটি বই বিক্রি করার জন্য’ এমন গালগল্প ফেঁদেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি নারী যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন। তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
অভিযোগ সম্পর্ক ট্রাম্পের বক্তব্য কী?
এ বিষয়ে এক বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এই নারীর সঙ্গে আমার জীবনে কোনোদিন দেখাই হয়নি। তিনি তাঁর লেখা নতুন বইয়ের বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন—এতেই তাঁর উদ্দেশ্যটা বোঝা যাচ্ছে। সবটাই বানানো গল্প।’
এ ছাড়া ক্যারল ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে কিংবা নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনের জন্য কাজ করছেন—কারো কাছে এমন তথ্য থাকলে তা হোয়াইট হাউসকে জানাতে বলেন ট্রাম্প।
এমন অভিযোগকে ‘মানহানিকর’ অভিহিত করে নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনকে ‘ভুয়া খবর ছড়ানোর’ জন্য দায়ী করেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ধিক্কার জানাই তাদের যারা প্রচারের জন্য কিংবা বইয়ের কাটতির জন্য কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এমন মিথ্যা গল্প ফাঁদে।’
‘কোনো প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের অভিযোগ তোলা হলো। এসব কেউই বিশ্বাস করবে না’, যোগ করেন ট্রাম্প।
এ ঘটনার কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই জানানোয় নিজের বক্তব্যে বার্গডর্ফ গুডম্যান কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ দেন ট্রাম্প।
কী অভিযোগ করেছেন ক্যারল?
নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধে ক্যারল জানান, ১৯৯৫ সালের শেষদিকে কিংবা ৯৬-এর শুরুর দিকে ট্রাম্পের সঙ্গে নিউইয়র্কের ‘বার্গডর্ফ গুডম্যান’ নামে একটি দোকানে যান ক্যারল। সে সময় তিনি ট্রাম্পকে ‘রিয়েল এস্টেট টাইকুন’ বা ধনকুবের হিসেবেই চিনতেন। ট্রাম্প তাঁকে কোনো একটি মেয়ের জন্য উপহার কেনার কথা বলেছিলেন।
ক্যারল জানান, তাঁরা দুজন সেই সময় বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন, ঠাট্টা-তামাশা করছিলেন। এমনকি একে অন্যকে বিভিন্ন ধরনের অন্তর্বাস পরতে উৎসাহিত করছিলেন।
এরপর তাঁরা দুজন দোকানের ড্রেসিং রুমে যান। সেখানেই ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে ক্যারল অভিযোগ করেন।
সেই সময় ট্রাম্প ও ক্যারল দুজনের বয়স ৫০ ছুইছুই। ট্রাম্প তখন বিবাহিত, মারলা ম্যাপলসের সঙ্গে সংসার করছেন।
ওই ঘটনার পর ক্যারল তাঁর দুই বন্ধুকে সব খুলে বলেন। বন্ধুদের মধ্যে একজন ক্যারলকে পুলিশের কাছে যেতে বলেন।
কিন্তু অন্য বন্ধুটি ক্যারলকে বিষয়টি কাউকে না জানাতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ভুলেও পুলিশের কাছে যেও না। তাঁর (ট্রাম্প) ২০০ আইনজীবী আছে। উনি তোমাকে স্রেফ মাটিতে পুঁতে ফেলবেন।’
নিউইর্য়ক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে ক্যারল ট্রাম্পসহ ছয়জন পুরুষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন।
ওই নিবন্ধে ক্যারল জানান, ট্রাম্পই শেষ তাঁকে যৌন হেনস্তা করেন এবং এরপর আর কোনো পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে যাননি তিনি।