পতাকা ডেস্ক: রমজান মাসব্যাপী এবি পার্টির গণ-ইফতার কর্মসূচির ৭ম দিনে আজ বিজয় নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্ত্বরে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন আওয়ামীলীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই তারা মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা এবং দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও ভোটাধিকার হরণ ছাড়া আওয়ামীলীগের আর কোন অর্জন নাই। জনগণ এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতিতে জীবন যাপন করছে। এই দুঃসহ যন্ত্রনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে অচিরেই বঞ্চিত জনতার নেতৃত্বে নতুন মুক্তি সংগ্রাম ও গণবিপ্লবের সূচনা হবে ইন’শাআল্লাহ।
আজ বিকেল সাড়ে ৫ টায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সফিউল বাসারের সঞ্চালনায় ও যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদ (একাংশের) ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কর্ণেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান। এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব ফারুক হাসানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এতে বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, এবি পার্টি আয়োজিত গণ ইফতারে এসে ভালো লাগছে, আরও ভালো লাগছে উপস্থিত রোজাদারদের দেখে। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান সরকার গত তিনটি নির্বাচনে জাল জালিয়াতি করে, জবর দখল করে আপনাদের ভোটাধিকার হরণ করে রেখেছে। আজ দেশে দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতি, তাতে মানুষ আজ দিশেহারা। অবৈধভাবে সরকারি দলের লোকজন যেভাবে লুটপাট করে অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তাঁর কোন বিচার এদেশে হয়নি। ছোট খাটো চোরদের বিচার করা হয় অথচ রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে, কাজেই এখন আর সরকারের উপর নির্ভর করে লাভ নেই। এখন জনগণের কাজ জনগনকেই করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত যেভাবে মুসলিম সংস্কৃতি ধ্বংসের পায়তারা করছে ঠিক তেমনি ভারতের করুনায় ক্ষমতায় আসীন হওয়া এই সরকারও একই ভাবে বাংলাদেশের মুসলিম কৃষ্টি কালচার ধ্বংসের পায়তারা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, যেভাবে চাল, ডাল তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে তাতে একজন দিনমজুর, শ্রমিক, সাধারণ মানুষের পক্ষে খাবার সংগ্রহ করা সম্ভব না। দেশ স্বাধীন হয়েছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কিন্তু মানুষ আজ অধিকার হারা। আজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে অরাজকতা তৈরি হয়েছে তা আমরা মানবো না। সাধারণ মানুষকে জাগতে হবে, অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই তারা মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা এবং দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও ভোটাধিকার হরণ ছাড়া আওয়ামীলীগের আর কোন অর্জন নাই। জনগণ এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতিতে জীবন যাপন করছে। এই দুঃসহ যন্ত্রনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে অচিরেই বঞ্চিত জনতার নেতৃত্বে নতুন মুক্তি সংগ্রাম ও গণবিপ্লবের সূচনা হবে
ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে। কিন্তু আমরা এখনো স্বাধীনতা পাইনি। পাকিস্তানের শোষণের বিপরীতে এখন আমরা ভারতের আধিপত্যবাদের কবলে পড়েছি। এদেশে কোন ধর্মের অনুষ্ঠান নিয়ে কোন সমস্যা নাই অথচ নব্বই ভাগ মুসলিমের দেশে আজ আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি ধ্বংসের চক্রান্ত করা হচ্ছে। ভারতের এই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমরা ভারতীয় পন্য বয়কটের ডাক দিয়েছি। আমরা যদি ভারতকে বানিজ্যে বয়কট করতে পারি তাহলে আমরা মুক্তি পাবো ইনশাআল্লাহ। তিনি এবি পার্টিকে এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক দল রয়েছে, ইচ্ছে করলে তারা এর চেয়ে বড় আয়োজন করতে পারে, কিন্তু তারা ক্ষমতা ছাড়া কিছুই বোঝেনা।
গণ ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, অধ্যাপক আবু হেলাল, এসএম আক্তারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, যুবপার্টির দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, যুবনেতা তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সিএমএইচ আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।