ফেনী প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৯ বছরেও গুম হওয়া ফেনীর সোনাগাজীর যুবলীগ নেতা সারোয়ার জাহান বাবুলের সন্ধান না পেয়ে তার মা ও ভাই সংবাদ সম্মেলন করে খুনীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে চরচান্দিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে গুম হওয়া যুবলীগ নেতা সারোয়ার জাহান বাবুলের ভাই চরচান্দিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মানিক ও মা বদরুন্নেছা অভিযোগ করেন, দলীয় কোন্দলের কারণে পৌর কাউন্সিলর নূরনবী লিটনের দায়ের করা মামলায় হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে ২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি ও সারোয়ার জাহান বাবুল ঢাকা যান। রাতে অবস্থানের জন্য ফকিরাপুল এলাকায় হোটেল ‘আসর’-এ রুম ভাড়া নেন তারা। ওইদিন সন্ধ্যার একটু পর হোটেল থেকে নেমে নাস্তা করার জন্য দোকানে যাওয়ার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রধারী ৫-৭জন দুর্বৃত্ত সাদা মাইক্রোবাস যোগে বাবুলকে তুলে নিয়ে যায়। তৎকালীণ সময়ে ২০১১সালের ২৮ অক্টোবর তিনি বাদি হয়ে পৌর কাউন্সিলর নূরনবী লিটন ও তার ছোট ভাই নাছির উদ্দিন রিপনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা ৫-৭জনকে আসামি করে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ নয় বছরেও বাবুলের সন্ধান পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা। মামলাও ন্যায় বিচার পাননি তারা। তাদের পুরো পরিবার মনে প্রাণে আওয়ামী পরিবারের সদস্য হওয়ার পরও তারা এই যুবলীগ নেতার সন্ধান ও ন্যায় বিচার না পেয়ে হতাশায় বুক বেধে আছেন। ছেলের সন্ধানের আশায় কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে গেছে তার মায়ের। ক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
মানিক আরো বলেন, তার এক ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, আরেক ভাই উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ছিলেন, ছোট ভাই বর্তমানে ফেনী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিনি বর্তমানে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করছেন। তৎকালীণ সময় তার ভাই সারোয়ার জাহান বাবুল সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। দলীয় কোন্দলের জেরে তৎকালীণ সময় পৌর কাউন্সিলর লিটন ও তার ভাই রিপনের সাথে বাবুলের বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জেরেই তাকে অপহরণ করে গুম করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের পরিবারের শেষ আকুতি, বাবুলের সন্ধান ও ন্যায় বিচার না পেলেও তারা এখন বাবুলের কবরটি দেখে যেতে চান। এরপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তারা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।
বাবুলের মা বদরুন্নেছা বলেন, ৯ বছর অতিবাহিত হলেও ছেলেকে আজও খুঁজে পাইনি। জীবিত হোক মৃত হোক আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। ‘বিচারের দায়িত্ব কার? কে করবে খুনীদের বিচার ? এই বলেই ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
বাবুল চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরচান্দিয়া গ্রামের ইস্রাফিল মিয়া ও বদরুন্নেছা দম্পতির ছেলে। সরোয়ার জাহান বাবুল ৯ ভাইয়ের মধ্যে ৬ষ্ঠতম সন্তান।