দিল্লিতে সহিংসতায় উগ্রবাদীদের হামলায় ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক মসজিদ। সেসময় মন্দির রক্ষায় সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এসেছিল হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কুইন্ট জানায়, উত্তর-পূর্ব দিল্লির চান্দবাগের মন্দির নিরাপত্তা পাহারা দেয় স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমরা।
মন্দিরটির পুরোহিত ওম প্রকাশ জানায়, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরাই মন্দির রক্ষায় মানববন্ধন তৈরি করে।
তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় আমরা স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমেরা সতর্ক ছিলাম। কোনো বহিরাগত যাতে আমাদের এখানে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে নজর রাখা হয়েছিল।’
এদিকে হাফিংটন পোস্ট ইন্ডিয়া জানায়, সাম্প্রদায়িক হামলায় আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তিনটি মসজিদ ও একটি মাজার। সেগুলো হলো-অশোকনগরে মওলানা বাক্স মসজিদ, চান্দ মসজিদ, গোলাকপুরি এলাকায় জামিয়া আরাবি মদিনাতুল উলুম মসজিদ এবং চান্দবাগের একটি মাজার।
সহিংসতায় মসজিদ ভাঙচুর করে মিনারে হনুমানের পতাকা উড়িয়ে দেয়ার ঘটনা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে উঠে এই ঘটনা। ক্ষোভে ও নিন্দায় ফেটে পড়েন নেটিজেনেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
দিল্লির সাম্প্রদায়িক হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক, যার মধ্যে অন্তত ৭০ জন গুলিবিদ্ধ।
টানা চার দিনের হামলায় ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যায়। কোথাও আবার নিজ হাতে সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙেছে পুলিশ।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র জানায়, রবিবার পরপর ছয়বার গোয়েন্দা সতর্কবার্তা দেয়ার পরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লির পুলিশ।