ভারতের রাজধানী দিল্লিতে দাঙ্গা নয়, পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার নেতাজি ইন্দোর স্টেডিয়ামে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ নামে এক নতুন কর্মসূচি ঘোষণাকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মমতা বলেন, দিল্লিতে যা হয়েছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। দিল্লিতে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণহত্যা হয়েছে। দিল্লি-কাণ্ডকে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দিল্লিতে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা করা হয়েছে। এর পর তাকে দাঙ্গার চেহারা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে দিল্লির মাটিতে যেভাবে মানুষ হত্যা হয়েছে এটা পরিকল্পিত গণহত্যা।
নিজের দাবির সপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কেন গণহত্যা বলছি? কারণ পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। দিল্লিতে গুজরাট মডেল প্রয়োগ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, বিজেপি এর পরেও ক্ষমা চায়নি। দেশের সম্মান তলিয়ে দিয়েছে এই সরকার। যারা দিল্লির মতো একটা ছোট জায়গা সামলাতে পারে না, তারা দেশ সামলাবে?
এ সময় কংগ্রেসকে নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী, ‘কংগ্রেসের সারা দেশে সংগঠন রয়েছে। কেন প্রতিবাদ নেই সারা দেশে?’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কংগ্রেস-সিপিএম ভোট ভাগাভাগি করে বিজেপিকে জিতিয়েছে। গতকাল এসে (অমিত শাহ) বলেছেন, ২০০ আসন টার্গেট করব। ৩০০ নয় কেন? কেন ৯৪ আসন ছেড়ে রাখতে চায় বিজেপি?
উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী মুসলিমদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।
কয়েক দশকের মধ্যে দিল্লির নজিরবিহীন এই সাম্প্রদায়িক হামলায় কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। আহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন গুলিবিদ্ধ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যায়। কোথাও আবার নিজ হাতে সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙেছে পুলিশ।