কিছুদিন আগে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকেজে তাবলিগ জামাতের জমায়েত নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ভারত। এই নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘করোনা ছড়ানো’র অভিযোগও উঠে। উসকানিমূলক এ প্রচারণা নিয়ে সরবও হন অনেকে। এবার জানা গেল, অন্য রোগীদের সুস্থ করে তুলতে এগিয়ে এসেছেন এক সময় করোনা আক্রান্ত তাবলিগ সদস্যরাই।
সংবাদমাধ্যম এই সময় জানায়, চলতি মাসে দিল্লির একটি হাসপাতালে মোট ১৪২ জন তাবলিগ জামাত সদস্য ভর্তি ছিলেন। তাদের মধ্যে ১২৯ জন সেরে উঠেছেন। তাদের অনেকেই এগিয়ে এসেছেন প্লাজমা থেরাপির জন্য রক্ত দিতে।
ওই হাসপাতালের চেয়ারপার্সন ডা. সুষমা ভাটনাগর জানিয়েছেন, “আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম রক্ত দিতে। ওনারা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। আমরা এখন পরবর্তী পর্যায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
আরও জানান, ভবিষ্যতের গবেষণার জন্যও রক্ত দিতে রাজি হয়েছেন তাবলিগ সদস্যরা। তার কথায়, “এই হাসপাতালে ভর্তি অধিকাংশ তাবলিগ সদস্য দিল্লির বাইরের বাসিন্দা, অনেকেই বিদেশি। লকডাউনের কারণে তারা বাড়ি ফিরতে পারেনি। আমরা এখন সুস্থ ব্যক্তিদের থাকার ব্যবস্থা করছি। সেইসঙ্গেই তাদের রক্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।”
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, রাজ্যের চার করোনা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছিল। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গিয়েছে।
দিল্লি সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়, সকল আক্রান্তের জন্য নয়, সংকটজনক রোগীরাই আগে এই থেরাপির সুযোগ পাবেন।
প্লাজমা থেরাপি হলো প্লাজমা বা রক্তরসের স্থানান্তর। করোনা থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত অন্য রোগীর শরীরে তা প্রবেশ করানো হয়। এতে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের ভাইরাসকে মেরে, তাকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। করোনা থেকে কোনো ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠার পর ১৪ দিন তাকে আইসোলেশনে রাখা হবে। এই সময়ে একাধিকবার টেস্ট করা হবে। রেজাল্ট নেগেটিভ এলে প্লাজমা নেওয়া যাবে।