sliderমতামতশিরোনাম

দিনে ভাত, রাতে ঘুম সুখ-শান্তি বাংলাদেশ

শাহীন রাজা: আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের কথা। সেদিন-ও এমনটাই ছিল। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু কোনদিকে যাচ্ছে ? এ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই আলো আঁধারে ছিল বাংলাদেশ।

হেমন্তের এক ভোরে সিদ্ধান্ত হয়ে যায়, কে হতে যাচ্ছে আগামীর নায়ক। জেনারেল জিয়া আবির্ভূত হন !
তাঁর বড় পরিচয় হচ্ছে, সাতাশ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ। এর বাইরে স্বাধীনতা যুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন, তিনি। এ ছাড়া আর তেমন কোন বিশেষ পরিচয় ছিল না।

৭ নভেম্বর পরিচয় একটাই সামরিক বাহিনীর লোক, তিনি। আধুনিক বিশ্ব রাজনীতিতে এই পরিচয়ের লোক নিয়ে নানা অসুখের কাহিনী আছে। জেনারলে জিয়াকে নিয়ে-ও অনেকের মাঝে এমন দ্বিধা, দ্বন্দ্ব কাজ করেছে।
কিন্তু না ! তিনি তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে সকল জল্পনা, কল্পনার অবসান ঘটান। তিনি প্রথম যে কাজটি করেন, তা হচ্ছে ক্রয় ক্ষমতা সাধরণ মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসেন।

পচাত্তর পূর্ববর্তী ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ জনগণের অনেক বাইরে ছিল। তাই জেনারেল জিয়া প্রথমেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় সর্বাধিক মনোযোগ দেন। এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ জনগণের হাতের নাগালে নিয়ে আসেন ! মানুষ আবার বাজারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে থাকে। এটা ছিল ঐ সময়ের জন্য এদেশের মানুষের বড় চাওয়া। এবং জেনারেল জিয়া তা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন !

এরপর দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। সাত নভেম্বর পূর্ববর্তী দেশে ছিল, অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলায় ভরা। সবই সরকারি দলের পেটোয়া বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো । এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার-ও সাহস ছিল দুঃসাহস ! কেননা এর পরিণাম ছিল ভয়াবহ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হস্তে দমন করেন। এবং জনগণকে স্বস্তি দিতে পেরেছিলেন।

এই দু’টো কাজ জেনারেল জিয়াকে জনপ্রিয়তা’র শীর্ষে নিয়ে যায়। সাধরণ জনগণ মনে করেন, জিয়া তাঁদের অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যাচ্ছে । তা-ই তাঁর গৃহীত সকল সংস্কার জনগণ পছন্দ করে। এবং জন কল্যাণেই এই সংস্কার করা।
জেনারেল জিয়া যে সময় ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন-ও পরিস্থিতি আজকের মতোই ছিল। সে সময় ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য একটাট পর সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা চলে।

একই সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্র কাদের সিদ্দিকী’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিরোধী সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রতিবেশী দেশ মদত জোগায় ! ইন্দিরা পরবর্তী মোরারজি দেশাই ক্ষমতায় এলে, এই মদত দেয়া বন্ধ করে দেন।
ইন্দিরা সরকার, পার্বত্য এলাকায়-ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ইন্ধন দেয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শান্তি বাহিনী নামে দীর্ঘ সমস্যা সৃষ্টি করে।
জেনারেল জিয়া, এধরনের সকল সমস্যা পাশ কাটিয়ে দেশকে সামনে নিয়ে যান। ঐ সময় কাজ করতে এতো পারিষদ-এর তেমন প্রয়োজন হয় নাই ।

আজকের প্রেক্ষাপটে-ও এক এবং অভিন্ন । তা-ই জনগণকে আস্থায় আনতে হলে, প্রথমেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসা খুবই জরুরী। এবং সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজ যে দলের-ই হোক না কেন তা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দখল নিতে একটা ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দল কাজ করছে। সেই প্রচেষ্টাকে-ও কঠোর ভাবে দমন করতে হবে।

এই দুটো কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। তাহলেই আগামীতে দেশের আপামর জনগণ আপনাদের পাশে থাকবে। দেশের মানুষ বিপদে, আপদে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আপনাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তা না হলে বিশ্ব দরবারে আপনি কতটা সম্মানিত বা পরিচিত তা কোন কাজেই আসবে না। এমনকি প্রত্যাখ্যান করতে মূহুর্ত বিলম্ব করবে না
লেখক সিনিয়র সাংবাদিক

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button