sliderউপমহাদেশশিরোনাম

দায়িত্ব নিয়ে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা বিদায় করবেন মুইজ্জু

বিবিসির সাথে সাক্ষাতকার

মালদ্বীপের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু তার ইশতেহারে বলেছিলেন, আমি জয়ী হলে মালদ্বীপে মোতায়েন করা ভারতীয় সেনাদের বের করে দেব ও দেশকে ভারতের প্রভাব থেকে মুক্ত করব।

এবার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে আরো দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করেন তিনি।

বিবিসিকে মুইজ্জু বলেন, আমরা চাই না মালদ্বীপের মাটিতে কোনো বিদেশী সেনা পা রাখুক। দেশের জনগণকে আমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন থেকেই আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব। আগামী নভেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন মুইজ্জু।

তিনি আরো জানান, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই মালদ্বীপে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করবেন। ভারতের জন্য এমন বার্তা নিশ্চয় অস্বস্তিকর। মুইজ্জুর এ সিদ্ধান্তের কারণে মালে ও নয়াদিল্লির সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে।

বিবিসির সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ মুইজ্জু জানান, নির্বাচনে জয়লাভের দুই-চার দিন পরই তিনি মালেতে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার মুনু মাহাওয়ারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সেসময় তিনি ভারতীয় হাই কমিশনারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, মালদ্বীপ থেকে সব ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ‘চীনপন্থি’ মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি জয়লাভের পর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে ভারত-মালদ্বীপের সম্পর্ক অন্যদিকে মোড় নিতে পারে।

অনেকে আবার বলছেন, মুইজ্জু সরকারের সাথে ভারতের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

দীর্ঘদিন ভারতের প্রভাব বলয়ের অধীনে রয়েছে মালদ্বীপ। বর্তমানে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সালিহ। যাকে ভারতপন্থী বলে দাবি করা হয়। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মালদ্বীপকে তিনি নয়াদিল্লির খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু বানিয়ে ফেলেন। অনেকে বলেন, সোলিহ’র নীতিই ছিল-ইন্ডিয়া-ফার্স্ট।
অন্যদিকে ৪৫ বছর বয়সী মুইজ্জুর রাজনৈতিক দল পিপিএম নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। এ সময় চীনের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলে মালদ্বীপ। ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পর্যবেক্ষণের জন্য কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক জায়গায় অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রটিকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে রাখতে চায় ভারত। এজন্য দেশটিকে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তাও দিয়েছে নয়াদিল্লি। এখন যদি সেখান থেকে ভারতীয় সৈন্যদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়, তবে তা হবে মোদি সরকারের জন্য বড় একটি ধাক্কা।

মুইজ্জু বলেন, মালদ্বীপে ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতি দেশটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে । বিশেষ করে হিমালয় সীমান্তে চীন-ভারত উত্তেজনা যেভাবে বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে মালদ্বীপ খুবই ছোট রাষ্ট্র। আমরা ক্ষমতার এই লড়াইয়ে জড়াব না।’

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button