
আন্দোলনরত ননএমপিও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আড়াই ঘণ্টার বৈঠক কোনো প্রকার সমাধান ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।
বৈঠকে দাবি পূরণের কোনও আশ্বাস মেলেনি। তাই আজ সোমবার থেকে অনশন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারী নেতারা।
রোববার (২০ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক-নেতৃবৃন্দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরে রাতে ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ও সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভুষন তাদের এই কর্মসূচির কথা জানান।
বৈককে শিক্ষক নেতারা এমপিও নীতিমালার বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে তা পরিবর্তন করে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্বীকৃতি দেয়ার মানে এই নয় যে এমপিওভুক্ত করতে হবে। স্বীকৃতির সঙ্গে এমপিওর কোনও সম্পর্ক নেই। স্বীকৃতি দেয়ার মানে হলো, পাঠদান করার যোগ্যতা থাকার স্বীকৃতি।
ডা. দীপু মনির বলেন, এখন থেকে প্রতিবছরই এমপিওভুক্ত করা হবে। এবার যে তালিকাটা করা হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন এবং নীতিমালা অনুযায়ী করা হয়েছে। এটা এখন আর বদলানো যাচ্ছেনা।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী এ বছরে নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নাই। এর ব্যত্যয় করা হলে আদালতে মামলা হবে। ফলে যোগ্য বিবেচিত হওয়া সকল এমপিও বন্ধ হয়ে যাবে।
অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তাহলে এমপিও পাবে না কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বীকৃতি তো ভিন্ন জিনিস, অলমোস্ট একটা ট্রেড লাইন্সের মতো। যেমন একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটা ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করেন। এমপিও প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমুহের মান নিয়মিত মনিটর করা হবে এবং যারা নীতিমালা অনুযায়ী ফলাফল করবে না তাদের এমপিও বাতিল করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নন-এমপিও শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলন ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা কাল সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে আমরণ অনশনে যাব।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মন্ত্রী মুদি দোকানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতিকে তুলনা করেছেন ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে। এটি দুঃখজনক।
এমপিও নীতিমালা-২০১৮ স্থগিত করে প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি একমাত্র মানদন্ড ধরে শুধু স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষকরা।
এ দাবিতে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। তবে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী এমপিওভুক্তি নীতিমালায় নতুনভাবে এমপিওভুক্তি করার জন্য বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এতে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনেক যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এর প্রতিবাদে ৩২ বারের মতো প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনে জড়ো হয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা।
পূর্বপশ্চিম