sliderস্থানীয়

‘ত্বকী হত্যাকারীদের সাপোর্ট দিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা’

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার আয়োজিত দাবীতে সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ত্বকী হত্যার পর থেকে শেখ হাসিনা খুনী পরিবারকে মদদ দিয়ে আসছিল। সাড়ে ১১ বছর আমরা হাসিনার কাছে বিচার চাই নাই। জনগণের কাছে বিচার চেয়েছিলাম। আর জনগণ হাসিনাকে দেশত্যাগ করানোর মধ্য দিয়ে সেই বিচার করেছে।

ত্বকী হত্যার বিচার দাবী ও বিচারহীনতার সাড়ে ১১ বছর উপলক্ষ্যে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের চাষাঢ়াস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের উদ্যোগে সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। পরে একটি র‌্যালির শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

সমাবেশে নিহত ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বী বলেন, ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য নারায়ণগঞ্জে আমরা বাদে আর কোনো বিরোধী দল ছিল না। আমরা নিয়মিত তাদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এই মাফিয়াদের গডফাদার ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তা না হলে নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারতো। এখন সরকার সরে গেছে আর ওসমান পরিবারও পালিয়েছে। কিভাবে তারা কুপিয়ে কুপিয়ে মানুষ মেরেছে। সাধারণ মানুষ তা দেখেছে কিন্তু কেউ ভয়ে বাধা দেয় নাই। একজন ১৭ বছরের কিশোর ত্বকীকে মারতে কত বল প্রয়োগ করতে হয় তা তার ডেডবডি দেখলে বুঝা যায়। তাকে ১১ জন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে অজ্ঞান করে। পরে গলা টিপে মেরে ফেলে। চোখ উপড়ে ফেলে। এর মাধ্যমে তারা জানান দিয়েছে তারা কত বড় হায়েনা ও ভয়ানক। শেখ হাসিনা সব জানতেন। তারপরও হাসিনা তাদের পাহারা দিয়ে রক্ষা করেছেন। এই ওসমান পরিবারকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন। এর ফলে যা তা সে করে গেছেন। জনগণের বিক্ষোভের মুখে হাসিনা পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন। এই ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে কোটি কোটি টাকা কামাতো। আর তা পাহারা দিতে বিশাল গুন্ডাবাহিনী পালতো। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই লাশ হয়ে যেতো।

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ত্বকী মঞ্চের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম বলেন, একটা শিশুকে হত্যার পর সাড়ে ১১ বছর বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। এতে বুঝা যায়, দেশে আইনের শাসন নাই। ত্বকীকে কি নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বর্ণনা করার সাহস আমার নেই। আমরা তখন বলেছিলাম এই হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না, ভবিষ্যতেও আমরা রাজপথ ছাড়বো না। আমরা হাসিনার কাছে বিচার চাই নাই। জনগণের কাছে বিচার চেয়েছিলাম। আর জনগণ হাসিনাকে দেশত্যাগ করানোর মধ্য দিয়ে সেই বিচার করেছে। শামীম ওসমানের নির্দেশে ত্বকীকে হত্যা করা হয়। ত্বকীকে হত্যা করার অন্যতম কারণ হচ্ছে তখন ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার তেমন কেউ ছিল না। আমরা চাই অতি দ্রুত ত্বকী হত্যাকান্ডের খসঢ়া চার্জশীট দেওয়া হোক। যে প্রকৃত ঘটনা ঘটেছে তার যেনো বর্ণনা থাকে। প্রকৃত খুনীকে গ্রেফতার করা হোক। আর একমাসের মধ্যেই আমরা এই চার্জশীট চাই।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রথীন চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button