আমির হোসেন, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার ট্যাকেরঘাট সীমান্তে চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা আনতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফের ছুঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হওয়া আহত বাংলাদেশী যুবক দেলোয়ার হোসেন (২৮) এর মৃত্যু হয়েছে।
আজ(১৪ জানুয়ারি শনিবার) সন্ধ্যা ৬ টায় সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক দেলোয়ার হোসেন মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন ও নিহত যুবক দেলোয়ার হোসেনের বড় ভাই আমির হোসেন।
নিহত যুবক দেলোয়ার হোসেনের উপজেলা উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে।
তার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর পাড়াপ্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের নেমে এসেছে শোকের ছায়া পড়েছে কান্নার রুল।
উল্লেখ: গতকাল (১৩ জানুয়ারি শুক্রবার) দুপুরে তাহিরপুর উপজেলার ট্যাকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া এলাকার দিয়ে নিহত যুবক দেলোয়ারসহ ৫/৬ জনের বাংলাদেশী একটি কয়লা শ্রমিকের গ্রুপ অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে চোরাই পথে কয়লা আনতে যাওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফ বাঁধা দেয়। এসময় নিহত যুবক দেলোয়ারসহ অন্য শ্রমিকরা বিএসএফ সদস্যদের উপর লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে এক বিএসএফ সদস্যদের হাতে পড়ে আহত। পরে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে তাদের লক্ষ্য করে ৪/৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে বিএসএফের ছুঁড়া একটি গুলি নিহত যুবক দেলোয়ারের কোমড়ের পিছনদিকে লেগে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়ে সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডের এলাকায় পড়ে থাকে। এবং তার সাথে কথা অন্য শ্রমিকরা দৌড়ে বাংলাদেশে চলে আসে। পরে স্থানীয়রা ও তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থা দেলোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পরে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তী করে।
আজ (১৪ জানুয়ারি শনিবার) সন্ধ্যা ৬ টায় সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হওয়া আহত যুবক দেলোয়ার হোসেন মৃত্যু বরণ করে।
এদিকে এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে আধঘন্টা ব্যাপী পতাকা বৈঠক করে বিএসএফ ও বিজিবি।এর পর আজ শনিবার বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশন এলাকায় বড়ছড়া আমদানী কারক সমিতির অফিসে দু দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে দুপুর ১২থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত রুদ্ধদার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পতাকা বৈঠকে ভারতের মেঘালয় ষ্টেইটের শিলং-১৯৩ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ বড়ছড়া কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের কম্পানি কমান্ডার দিলীপ সিং সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন ও বাংলাদেশ পক্ষে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি পরিচালক মোঃ মাহবুবুর রহমান পিবিজিএমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে আরও জানাযায়,উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন কলাগাও,ঝঙ্গল বাড়ি, লালঘাট এলাকা দিয়ে প্রতিদিন রাতে ও দিনে প্রকাশ্যে সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারিরা পুলিশ,বিজিবি,কাস্টমসও সাংবাদিকের নামে প্রতি বস্তা তিন শত টাকা তুলে সীমান্তের বিজিবির সোর্স পরিচয় ধারী লালঘাট গ্রামের ইয়াবা সম্রাট কালাম মিয়া, লাকমা গ্রামের রতন মহালদার, বড়ছড়া গ্রামের ইছাক মিয়া গংসহ কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তি।তাদের নামে বিজিবির একাধিক মামলাও রয়েছে এবং চোরাচালানী সিন্ডিকেট মুল হুতা হিসাবেও রয়েছে তাদের বেশ পরিচিতি। প্রতি বস্তা কয়লার বাজার মূল্য ১২ শত থেকে ১৩ শত টাকা। সোর্স পরিচয়ধারীরা সবার সাথে কথা বলে ও তাদের প্ররোচনায় স্থানীয় মানুষকে গ্রিন সিগনাল দিলেই প্রথমে ভারত থেকে বাংলাদেশের সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকার জঙ্গলে এনে জমা রাখে পরে রাত ১২ থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ঠেলাগাড়ি, হেন্ড ট্রলি ও লড়ি বোঝাই করে বড়ছড়ার বিভিন্ন ডিপোতে নিয়ে যায় তার। ভারত থেকে অবৈধ পথে কয়লা আনতে গেলেই বিএসএফ গুলি বর্ষন করে ও মারধর করে এর পূর্ব চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা আনতে ভারতীয় চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপায় তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে।