sliderআন্তর্জাতিক সংবাদ

তরুণদের লোভ দেখিয়ে দলে ভেড়ায় বোকো হারাম

গত এক বছরে আফ্রিকার কয়েকটি দেশের আঞ্চলিক বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে পিছু হঠতে হয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র সংগঠন বোকো হারামকে।
ওই অঞ্চলে কিশোর ও তরুণদের টাকা দিয়ে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেবার দুর্নাম রয়েছে বোকো হারামের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি বাড়ি ফিরে আসা এরকম কয়েকজনের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির থমা ফেসি।
নিজেদের জমিজমা আর ভিটে বাড়ি ছেড়ে দুরে মরুভুমিতে এসে ক্যাম্প গড়েছেন নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের এক গ্রামের মানুষজন।
ইসলামপন্থী সশস্ত্র সংগঠন বোকো হারামের জঙ্গীদের হামলার মুখে এভাবে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। কিন্তু হামলার বেশ কিছু আগে এই গ্রামেরই অনেক তরুণ চলে গেছেন বোকো হারামে যোগ দিতে।
সম্প্রতি পালিয়ে আসা একজন ২৬ বছর বয়সী ইউসুফ বলছিলো, তাদের অনেক টাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো।
“বাড়িতে করার কিছুই ছিলো না। কাজ ছিলো না। ওরা এসে আমাদের বললো অনেক টাকা দেবে। আমরা যা চাই তাই পাব”।
বালির মধ্যে হাটু মুড়ে বসে কথা বলছিলো ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর আদম আর ইউসুফ।
তাদের ভাষ্য অনুযায়ী পাশের দেশ চাদ থেকে কিছু যোদ্ধা এসেছিলো। অর্থাৎ বোকো হারামের কার্যক্রম আরো বিস্তৃত হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছে।

বোকো হারাম জঙ্গীগোষ্ঠী।
বোকো হারাম জঙ্গীগোষ্ঠী।

ইউসুফ বলছিলো তারা কেন ফিরে এলো, “আমাদের ওরা কয়েকটি দলে বিভক্ত করে রাখতো। যারা বেশিদিন ধরে ওদের সাথে আছে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ ছিলো। তারা সবাই একসাথে কোরান পাঠ করতো। কিন্তু এসব থেকে দুরে রাখা হতো আমাদের। ওরা আমাদের টাকা দেবার কথা বললেও ওরা তা দেয়নি। পরে আমরা কোনরকমে পালিয়ে এসেছি”।
ইউসুফ বা আদম যে গ্রামের বাসিন্দা তার আশেপাশের অনেক গ্রামেই বোকো হারাম বেশ ক’বার করে হামলা চালিয়েছে।
বোমা হামলায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ব্যস্ত বাজার।
সেসব গ্রামের মানুষজন নিজেরাই বলছেন তাদের গ্রামের তরুণরাই জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে এসব ঘটিয়েছে। যে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিল ইউসুফ ও আদম- এখন সে গ্রামেই তাদের আবারও আশ্রয় মিলেছে।
গ্রামের মানুষজন তাদের দ্বিতীয়বারের জন্য সুযোগ দিয়েছে। জঙ্গীদের ধরতে সেনাদের টহল চলছে।
গত এক বছরে আফ্রিকার কয়েকটি দেশের আঞ্চলিক বাহিনী বোকো হারামের বিরুদ্ধে একত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
আঞ্চলিক সেনাদের কমান্ডার মেজর জেনারেল লো আদোসান বলছেন সন্ত্রাস প্রতিহত করতে তাদের আরো সময় লাগবে।
“বিষয়টিকে যদি দু’ভাবে দেখা যায়, যেমন ধরুন বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদ। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আমরা ইতিমধ্যেই পরাজিত করেছি। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ? সেটি রুখতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে”
আঞ্চলিক বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে বোকো হারাম। তাদের কবজায় থাকা বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখল করে নিয়েছে আঞ্চলিক বাহিনী।
কিন্তু তরুণদের টাকার লোভ দেখিয়ে দলে ভেড়ানোর কৌশলে সন্ত্রাসের ভয় সেখানে রয়েই যাচ্ছে।
বিবিসি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button