
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে মানুষ ঠেকাতে ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-সিংগাইর মহাসড়কসহ মানিকগঞ্জ হতে ঢাকা প্রবেশের সকল রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে আবার কোথাও টহল দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল পাঁচটা থেকে ঢাকাগামী যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মূলত সড়কপথ গুলোতে এক নতুন পুলিশি আতঙ্ক চলছে।
মহাসড়কে চলাচলরত বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস ও মটরসাইকেল সবই চেক করছে পুলিশ। কোথাও কোথাও এ্যাম্বুলেন্সও পুলিশি চেকের আওতায় পড়ছে।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আগামীকাল শনিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের যেতে বাধা দিতে তল্লাশি ও হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে পুলিশ বলছে, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়; মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ধরতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জে অংশ এবং মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে পুলিশকে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়নি। তবে বিকেল ৫টার পর থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সদর থানার পুলিশ তল্লাশি চৌকি বসায়। সেখানে ঢাকাগামী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো: জিন্নাহ খান বলেন, ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন হলে দু’দিন আগে থেকে সড়কে পুলিশ তল্লাশি চৌকি বসায়। সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের যেতে বাধা দিতেই এসব তল্লাশি চৌকিতে বিভিন্ন যানবাহন তল্লাশি করা হয়। বিকেল থেকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তবে আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ভাবে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় যাচ্ছে এবং যাবে।
সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠু বলেন, ইতোমধ্যেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ হানা দেয়া শুরু করেছে। বিএনপি নেতা সিংগাইরের সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয়ের বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যাতে তারা মহাসমাবেশে না যায়। রাস্তায় চেক পোস্ট বসিয়ে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, কোনো দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যানবাহনের তল্লাশি চালানো হচ্ছে না।
তিনি বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারসহ জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে এই অভিযান চলছে।
প্রতক্ষ্যদর্শী একজন বলেন (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) পুলিশি তল্লাশি থেকে রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সও রেহাই পাচ্ছে না। একই অভিযোগ বিএনপির নেতাদেরও।
জেলা বিএনপির এক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, মানিকগঞ্জ হতে যেকোনো মূল্যে ১০ হাজারের বেশী নেতাকর্মী মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করবে।
সিংগাইর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্বাস মিলন বলেন, হয়রানি আর চেকপোস্ট বসিয়ে মহাসমাবেশে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না। সরকারের পতন ঠেকানোর শেষ চেষ্টা করেও রেহাই পাবে না।