sliderরাজনীতিশিরোনাম

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠস্বর

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভায় জাতীয় নেতারা বলেছেন, সবার জন্য চিকিৎসা অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গিয়েছেন। তিনি ছিলেন অন্যায়ে বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সেগুনবাগিচায় শিশুকল্যান পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্র ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্মুখ ভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন একই সাথে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী চিকিৎসক, দানবীর, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সমাজসেবক ও রাজনৈতিক স্পষ্টভাষী ও সময়ের সাহসী সন্তান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার কণ্ঠ। তার মৃত্যুতে দেশ ও জাতি একজন দেশপ্রেমিককে হারিয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ, সবার জন্য চিকিৎসা অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গিয়েছেন। তিনি সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনের রয়াল কলেজ ও সার্জনসে এফআরসি ডিগ্রিতে পড়াকালীন সময়ে চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। নিজে একজন চিকিৎসক হওয়ায় তিনি সহযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে রণাঙ্গনে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, গণবিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডসহ বহু শিল্প প্রতিষ্ঠা করে গনমানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সারাদেশে সিলেটে সুনামগঞ্জ ধিরাই উপজেলা, মাগুরা, নোয়াখালী কুমিল্লা চাঁদপুর, চট্টগ্রাম আনোয়ারায় যেখানে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে সেখানে গিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সকারকে নির্দেশ দিয়েছেন ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। নারায়ণগঞ্জে, মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ও কারখানায় আগুনে মানুষ হতাহতের ক্ষতিগ্রস্ত পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন, সবখানেই সরকারের দলীয় সন্ত্রাসী ও নেতারা জড়িত ছিলেন তা তিনি জোর দিয়ে বক্তব্য রাখেন। সাংবাদিক সম্মেলন করে তার প্রতিকার চান। ওই সব যায়গায় তিনি আমাদেরকে নিয়ে গেছেন। নাগরিক সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা ইস্যুতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ব্যবস্থা করেছেন।

বাবলু আরো বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরামর্শে গণতন্ত্র মঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়, তার জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

সুর্প্রীম কোটের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রশীদ বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরণ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার না থাকায় জনগণ মুক্তিযুদ্ধের সুফল পাচ্ছে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশে গণতন্ত্র ভোটাধিকার নির্বাসনে। এরশাদ সরকারের আমলে ওষুধ নীতি প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের কৃতিত্ব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। আজকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ওষুধ রফতানি শুরু হয় এই ওষুধ নীতির কারণে।

সভাপতির বক্তব্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর্তমানবতার কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। গণমানুষের মাঝে এখনো অনেকের চেয়ে তীব্র ও উজ্জ্বলভাবে বেঁচে আছেন তার কাজের মধ্য দিয়ে, তার কর্মের মধ্যে দিয়ে। আমার জীবনের আইডল ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কারণ উনি ক্রিয়েটিভ ছিলেন, উনি প্রতিবাদী ছিলেন। উনি যেভাবে প্রতিবাদ করতেন সমাজের কেউ তা করতেন না। এত বিগ্রহ, এত জটিলতার মাঝেও উনি প্রতিবাদ করে গেছেন। আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিতে চাই।

লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বিশিষ্ট সাংবাদিক নিউনেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক ও গ্রীন ভয়েস এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, গণঅধিকারের সদস্য সচিব মো: ফারুক হোসাইন, মানবাধিকার সংরক্ষণ সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন জুইঁ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মো: লিটন, লেবার পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, যুগ্ম-মহাসচিব হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, ছাত্রমিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মো: মিলন, মহানগর লেবার পার্টির নেতা কে এম আবু তাহের, তারেক আজিজ প্রমুখ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button