ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনের ফলে ঠাকুরগাঁও জেলায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। কয়েক দিন ধরে ঠাকুরগাঁও জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গড়ে ২ শতাধিক শিশু ভর্তি থাকছে। ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা কম থাকায় হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে রোগী রেখে চলছে চিকিৎসা। এতে রোগীরা নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এক সঙ্গে এত সংখ্যক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের। হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের ৪৫ শয্যার বিপরীতে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে, ২১০ শিশু। ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার প্রায় ৫ গুণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে শতাধিক শিশুকে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। এ বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ২জন চিকিৎসক ও ২জন সিনিয়র স্টাফ নার্স। হাসপাতালের শিশু বিভাগে ঘুরে দেখা গেছে, ভর্তি রোগীদের মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তই বেশি। ওয়ার্ডের ভিতরে অনেক রোগী বেড পাননি। বারান্দার মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে রোগী ও স্বজনদের। ওয়ার্ডে রাউন্ডে থাকা ডাক্তারের সেবা নিতে রোগীর স্বজনরা শিশুদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স তাজনেহার খাতুন বলেন, এত রোগীর চাপ সামাল দেওয়া আমাদের পক্ষে কষ্টকর। সারোয়ার হোসেন নামে আরেক শিশুর অভিভাবক বলেন, ডাকাডাকি করেও নার্স পাওয়া যাচ্ছে না। সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ২জন মাত্র নার্স দিয়ে ২১০ শিশু রোগীর ইনজেকশন দেওয়া, স্যালাইন দেওয়া ও খোলা, রক্তের নমুনা সংগ্রহ ও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর সেবা দেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সাজ্জাদ হায়দার শাহীন বলেন, প্রতিবছর সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় শিশুরা সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট সহ নানারোগে আক্রান্ত হয়। তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২৫০ শয্যার জনবলের চাহিদা চেয়ে একাধিকবার পত্র-সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দেওয়া হয়েছে। জনবল ও শয্যাসংকট থাকায় রোগীদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা প্রদানে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের। স্যালাইন ও ঔষুধ না পাওয়া প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, এত বিপুল সংখ্যক রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের ঔষুধও সরবরাহ করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে আরও ঔষুধের প্রয়োজন।