sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

ট্রাম্পের শাসন নিয়ে ওবামা-বুশের উদ্বেগ

সাবেক দুই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জর্জ ডব্লিউ বুশ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রচ্ছন্নভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। ‘বিভাজন’ ও ‘শঙ্কার’ রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করতে আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওবামা। অন্য দিকে জনজীবনে ‘গুণ্ডামি ও কুসংস্কারের’ সমালোচনা করেছেন বুশ।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে তারা আলাদাভাবে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলেছেন। সাবেক এই রাষ্ট্রনায়কেরা তাদের উত্তরাধিকারী ট্রাম্প সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। তবে ট্রাম্প তার দুই পূর্বসূরির সমালোচনা সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। ওবামাকেয়ার বাতিলে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা ও প্যারিসের জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়া এবং বিতর্কিত ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’র পর থেকেই ওবামা তার নীরবতা ভাঙেন।
নিউ ইয়র্কের নিউ জার্সিতে ডেমোক্র্যাটদের একটি অনুষ্ঠানে ওবামা বলেন, বিশ্বের কাছে আমেরিকানদের বার্তা পাঠাতে হবে যে, আমরা একটি ‘বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা একটি শঙ্কার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করছি’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সেই একই বিভাজনের পুরনো রাজনীতি ভাগাভাগি করতে পারি না, যা আমরা বহুবার আগে দেখেছি।’ ওবামা বলেন, ‘বর্তমানে রাজনীতি দেখে মনে হচ্ছে আমরা বিছানায় পড়ে আছি। সেখানে শুয়ে লোকেরা ৫০ বছর আগের রাজনীতি দেখছে। এটা ২১ শতক নয়, ১৯ শতক নয়।’
নিউ ইয়র্কে আলাদা এক অনুষ্ঠানে বুশ বলেন, ‘গোঁড়ামিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও পুরোদস্তুর মিথ্যার জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষে সমর্থনের তীব্রতা হ্রাস পাওয়ার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছেÑ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদকে নৃতাত্ত্বিকতায় বিকৃত করতে দেখেছি। অভিবাসন সর্বদা আমেরিকাতে গতিশীলতা নিয়ে এসেছে, তা ভুলে যাওয়া হচ্ছে।’
সাবেক এই প্রেসিডেন্টদ্বয় এখনো পর্যন্ত ট্রাম্পের নীতিগুলো সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য এড়িয়ে গেছেন।
গত বছর তার নির্বাচনের আগে ওবামা ও বুশ উভয়ের সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। তাদের প্রত্যেককে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সম্ভবত ‘সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে অবহিত করেছিলেন ট্রাম্প। এ জন্য গত বছরে মার্কিন নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্পের প্রতি বিরক্ত বুশ। তিনি নিজের রিপাবলিকান দলের প্রার্থী থাকলেও ট্রাম্পকে ভোট দেননি, যা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছিল।
বুশ বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সরকারের ওপরে মানুষের আস্থা কমেছে। প্রয়োজনের সময়ে প্রশাসন মুখ থুবড়ে পড়ছে। অর্থনৈতিক উন্নতিতে নানা বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। অসন্তোষ বাড়ছে, ফলে বিরোধের সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের অবকাশ সৃষ্টি হচ্ছে, যা কাম্য নয়।
এই অনুষ্ঠানে বাকি অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বুশের সহধর্মিণী লরা বুশ, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইস ও জাতিসঙ্ঘের বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি।
বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমস

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button