সখীপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাকে হত্যার অভিযোগে বাবার ফাঁসি চেয়ে মানববন্ধন করেছে ছেলে রনি মিয়া ও পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের শ্রীপুর মধ্যপাড়া মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে ছেলে রনি মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা মায়ের সাথে যা করেছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এর আগেও বাবা অনেকবার মাকে শারীরিক নির্যাতন করেছে। এমনকি আমাকে ও আমার স্ত্রীকেও কয়েকবার হত্যা করতে চেয়েছে। এবার মাকে মারধর করে বিষ খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি বাবাকে দ্রুত গ্রেফতার করে তার ফাঁসির দাবি জানাই।’
নিহত রৌশনারার ননদ স্বরবানু বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে স্থানীয় এক নারীর সাথে জাহাঙ্গীর অপকর্ম করে ধরা পড়লে গ্রাম্য সালিশে তাকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই ঘটনার পর সে আরেক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীর ওই নারীকে বিয়েও করেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। তিনি নিয়মিত ওই নারীকে টাকা-পয়সা দিতেন। স্বামীর এমন অপকর্মের প্রতিবাদ করলে জাহাঙ্গীর রৌশনারাকে মারধর করত। এবার মেরে ফেলেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর ও রৌশনারা দম্পতির গত ৩৫ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম পরকীয়া করেন এমন অভিযোগের জেরে স্ত্রী রৌশনারা সাথে প্রায়ই তার ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রী রৌশনারাকে শারীরিক নির্যাতন করে বিষ খাওয়ান। পরে ছেলেরা রৌশনারাকে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শারীরিক অবস্থা উন্নতি হলে রৌশনারাকে ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়িতে আনা হয়। পর দিন শুক্রবার সকালে তাকে ঘরে মৃত পাওয়া যায়। স্বামী জাহাঙ্গীর আলম এবং তার মা ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত নয়া দিগন্তকে জানান, এ ঘটনায় গত ২৫ অক্টোবর শুক্রবার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে আইনিব্যবস্থা নেয়া হবে।