
ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠিতে মাল্টিপারপাস সমিতির মাঠ কর্মীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা (নং-১১৭) দায়ের হয়েছে। ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে নারী
ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শুনানী শেষে রোববার বিকেলে সদর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকায় গ্রামীন শ্রমজীবী সমবায় সমিতির মাঠ কর্মী এক কলেজ ছাত্রী (১৮)কে ধর্ষণের চেষ্টা চালান প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা উজ্জল খান।
অভিযোগে জানাগেছে, শেখেরহাট এলাকার গ্রামীন শ্রমজীবী সমবায় সমিতি নামে একটি মাল্টিপারপাস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক উজ্জল খান। ওই সমিতিতে ঋণদান কার্যক্রমের কিস্তির টাকা আদায় করতে মাঠ কর্মী হিসেবে কলেজ ছাত্রী (১৮)কে চাকুরী দেন। ঋণের কিস্তির টাকা উত্তোলন করে ২টার মধ্যে জমা দিয়ে বাসায় ফিরতেন তিনি। অফিসে অন্য কোন জনবল না থাকায় তাকে একা পেয়ে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন প্রতিষ্ঠান প্রধান(এমডি) উজ্জল খান। তার নজরের অঙ্গভঙ্গি বুঝে এড়িয়ে চলতেন ওই মাঠকর্মী। এরপর তাকে বেতন বাড়িয়ে দেবার কথা বলে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন। তাতে অসম্মতি জানালে মালিক উজ্জল খান ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেবার কথা জানালে সমিতির সমুদয় হিসেব না দিয়ে যেতে বাধা দেয়া হয় তাকে। এসব ঘটনা ভিকটিম তার অভিভাবককে অবহিত করেন। গত ২০ আগস্ট রোববার দুপুর ১টার দিকে সমিতির দরজা বন্ধ করে ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালান মালিক উজ্জল খান। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে উজ্জল খান একথা কাউকে না বলতে হুমকি দেন। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে ২২ আগস্ট সকালে শালিশীর কথা হলে লম্পট উজ্জল খান এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এঘটনায় কোন মামলা- মোকদ্দমা হলে ভিকটিমকে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে ভিকটিমের বাবাকে লোক মারফত হুমকি দেন তিনি। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের হুমকিতে ভিকটিমের শ্রমজীবী পিতা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আল-আমিন পলাশ জানান, মামলাটি আদালতে পেশ করে শুনানী করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক তা আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসী জানান, উজ্জল খান মাল্টিপারপাস সমিতির নামে কলেজ পড়–য়া ছাত্রীদেরকে মাঠ কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপূর্বেও চারজন মাঠ কর্মীর সাথে আপত্তিকর আচরণ করেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। একজন মাঠ কর্মীকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় স্থানীয়ভাবে ১লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে মিমাংসা করেন উজ্জল খান। সে বেপরোয়া আচরণ করায় এবার আইনের আওতায় এসেছে। সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানান এলাকাবাসী।