sliderরাজনীতিশিরোনাম

‘জীবন দিয়ে জিয়াউর রহমান প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ তার সব ছিল’

‘প্রথম বাংলাদেশ আমার, শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার, মরণ বাংলাদেশ’ এই গানটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রিয় ছিল জানিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নিজের জীবন দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ তার সব ছিল।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শহীদ জিয়া ও বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে সভার সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন মহাসচিব ডা. মো: আবদুস সালাম।

ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো: মেহেদী হাসান ও ডা. আশফাক নবী কনকের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজ উদ্দিন নসু, ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. শহীদুল আলম, ডা. শহীদুর রহমান, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, যুগ্ম মহাসচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকা, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার, ডা. এমএ কামাল, ডা. জাহানারা লাইজু প্রমুখ।

এছাড়াও ড্যাব নেতা ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. রুস্তম আলী মধু, ডা. এনামুল হক এনাম, ডা. বাসেদুর রহমান সোহেল, ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু, ডা. এম শাহিন, ডা. হুমায়ুন কবির প্রিন্স, ডা. নাভিদ মোস্তাক, ডা. তানজিম রুবাইয়্যাত আফিফ, ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম তারিকসহ শতাধিক চিকিৎসক সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে বাংলাদেশ কৃষি, তৈরি পোশাক, প্রবাসী আয় এই তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। যার ভিত্তি রচনা করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি দেশের উন্নয়নে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলেছেন। কৃষির সমৃদ্ধির জন্য তিনি খাল ও নদী পুনঃখনন ও গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করেন। উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি নানামুখী প্রকল্প নিয়েছিলেন। এভাবে আল্লাহর মেহেরবাণীতে দেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পন্ন হয়, এমনকি গিনিতে চাল রফতানি করা হয়েছিল। বাংলাদেশের উন্নয়নের শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, জিয়াউর রহমান তার শাসনামলে বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রফতানি শুরু করেছিলেন। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। অথচ এই দেশে একসময় মানুষ ডাস্টবিনে পশুর সাথে খাবার খেত। কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু এক শিফটের পরিবর্তে দুই শিফটে কাজ শুরু করেন জিয়াউর রহমান। তিনি সকল কল-কারখানা পর্যায়ক্রমে চালুর মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করান। অর্থাৎ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সকল ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু তাকে দেশের জনগণের হৃদয় থেকে মুছে ফেলার চক্রান্ত হয়েছে, এখনো হচ্ছে। এ সময় জিয়াউর রহমানের সাথে বিভিন্ন সময় কাজ করার ঘটনা স্মৃতিচারণ করেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। তিনিই প্রথম ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ যেদিন পাকিস্তানি সেনারা হামলা চালায় এ দেশের মানুষের ওপর। তিনি প্রথম তার অস্ত্র পাকিস্তান সেনাদের মুখে তাক করে বলেছিলেন ‘উই রিভিল্ট’। প্রথম থেকে যুদ্ধের শেষদিন পর্যন্ত দেশকে মুক্ত করে তিনি ঘরে ফিরেছিলেন। একটা ব্যক্তি আর কী দিয়ে তার সক্ষমতা দেখাবেন? অসংখ্য দৃষ্টান্ত যার।

তিনি আরো বলেন, আজকে ক্ষমতাসীন সরকারের উচিৎ জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকা। কিন্তু তারা নির্লজ্জের মতো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করছে। ঋণ দিয়ে তিনি গার্মেন্টস শিল্প চালু করেছিলেন। বেকারত্ব দূর করতে নানা কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যের ১৬ হাজার কর্মী পাঠিয়ে তিনি প্রথম প্রবাসী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছিলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি এখনো মর্যাদা ও শক্তিমত্তার সাথে টিকে আছে। ক্রমান্বয়ে এর কলেবর বাড়ছে। এটাই শহীদ জিয়াউর রহমানের কৃতিত্ব। তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম বলেছিলেন ‘উই রিভোল্ট’। তার ঘোষণায় দেশের মানুষ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে যে প্রতিরোধ গড়ে ওঠেছিল সেটি স্ট্যালিন গ্রাডের প্রতিরোধের মতো।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাত্র অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছিলেন। তিনিই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ জিয়াউর রহমান সেখানে সফল। আজকে মানুষের স্বাধীনতা নেই, গণতন্ত্র নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। মানুষ স্বাধীনতার পর মনে করেছিল একটি জাতীয় সরকার হবে। কিন্তু মরহুম শেখ মজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করেন। তবুও নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আওয়ামী লীগ সরকার জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি ও চক্রান্ত করছে। তবে ষড়যন্ত্র করে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দেয়া যাবে না।

ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম বলেন, জাতির ক্রান্তিকালে যাকে পেয়েছি আমরা তিনি হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। যেদিন এ দেশের মানুষকে নির্বিকারে হত্যা করে যাচ্ছিল পাকিস্তানের বর্বর বাহিনী সেদিন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর জিয়াউর রহমানই প্রতিরোধ গড়ে তুলে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান বলেন, এ সরকার বিএনপিকে ভাঙতে নানা প্রচেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমাদের দলের নেতাদের সুদক্ষ পরিচালনায় তা কিছুই করতে পারেনি তারা। আমাদের দেশ ও জনতার অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই চলছে, তা ফিরিয়ে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
নয়া দিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button