sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

জামাল খাসোগির গুম: তুর্কী টিভিতে ‘সৌদি ষড়যন্ত্রকারী’ সম্পর্কে ভিডিও ফুটেজ

তুরস্কের গণমাধ্যমে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ প্রচারিত হয়েছে যাতে সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, ইস্তাম্বুলের বিমান বন্দর দিয়ে কথিত সৌদি গোয়েন্দারা ঢুকছে এবং বেরিয়ে যাচ্ছে।

সৌদি রাজতন্ত্রের একজন কড়া সমালোচক মি. খাসোগি গত ২রা অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন।

কিন্তু তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ।

তুর্কী কর্তৃপক্ষ বলছে, তাকে খুন করা হয়েছে। তবে সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করছে।

ভিডিওতে কী রয়েছে?

তুর্কী টিভি চ্যানেল আরটিআর-এ যে ভিডিওটি প্রচার করা হয় তা জোগাড় করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে।

এতে দেখানো হয়েছে, কতগুলো গাড়ি সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ঢুকছে।

এর মধ্যে কাল রঙের একটি ভ্যান সম্পর্কে তুর্কী কর্তৃপক্ষ জানতে খুবই আগ্রহী।

এই সৌদি বিমানের সাথে জামাল খাসোগির গুমের ঘটনার সংযোগ রয়েছে বলে তুর্কী তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন।এই সৌদি বিমানের সাথে জামাল খাসোগির গুমের ঘটনার সংযোগ রয়েছে বলে তুর্কী তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একদল সৌদি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে দিয়ে প্রবেশ করছে, হোটেলে চেক-ইন করছে এবং পরে সে দেশ ত্যাগ করছে।

তুর্কী তদন্তকারীরা দুটি সৌদি গাল্ফস্ট্রিম জেট বিমান সম্পর্কেও খোঁজখবর করছে।

এই বিমান দুটি ২রা অক্টোবর অবতরণ করেছিল। মি. খাসোগি সেই দিন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।

মি. খাসোগির কনসুলেটে ঢোকার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

কিন্তু তার বেরিয়ে আসার কোন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।

তুর্কী সংবাদপত্র সাবাহ্ খবর দিয়েছে যে সৌদি গোয়েন্দা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য ঐ সাংবাদিকের গুমের সাথে জড়িত বলে তারা জানতে পেরেছে।

পুলিশ এখন প্রায় ১৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখছে।

তুরস্ক বলছে, তারা সৌদি কনসুলেটে তল্লাশি চালাবে। অন্যদিকে, সৌদি আরব বলছে যে কোন তদন্তের সাথে তারা সহযোগিতা করবে।

কিন্তু তুর্কী সরকার দাবি করছে, মি. খাসোগি যে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছে সৌদি সরকারকেই সেটা প্রমাণ করতে হবে।

জামাল খাসোগির রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পাশ্চাত্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যমে ক’দিন ধরেই তুমুল হৈচৈ চলছিল – কিন্তু এখন তা পুরাদস্তুর হত্যা রহস্যের চেহারা নিয়েছে ।

জামাল খাসোগির সৌদি কনসুলেটে ঢোকার দৃশ্য।জামাল খাসোগির সৌদি কনসুলেটে ঢোকার দৃশ্য।

৫৯-বছর বয়সী মি. খাসোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন সমালোচক, এবং বেশ কিছুকাল ধরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, খাসোগিকে হত্যা করতে ১৫ জনের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয়েছিল।

কেন সৌদি কনস্যুলেটে এসেছিলেন জামাল খাসোগি?

মি. খাসোগির কনস্যুলেটে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তার পূর্বতন স্ত্রীকে যে তিনি ডিভোর্স (তালাক) দিয়েছেন – এ মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র নেয়া, যাতে তিনি তুর্কী বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করতে পারেন।

মি. খাসোগি তার মোবাইল ফোনটি মিস চেঙ্গিসের হাতে দিয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকেন।

মিজ চেঙ্গিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, মি. খাসোগি এ সময় বিমর্ষ এবং মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন – কারণ তাকে ওই ভবনে ঢুকতে হচ্ছে।

হাতিস আরো বলেন, জামাল খাসোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি কনস্যুলেট থেকে বের না হন – তাহলে তিনি যেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ানের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন।

হাতিস চেঙ্গিস, জামাল খাসোগির হবু বধু।হাতিস চেঙ্গিস, জামাল খাসোগির হবু বধু।

তিনি জানান, তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত।

কিন্তু তিনি জামাল খাসোগিকে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেন নি।

বুধবার সকালবেলা কনস্যুলেট খোলার সময় তিনি আবার সেখানে উপস্থিত হন।

তখন পর্যন্ত মি. খাসোগির কোন খোঁজ মেলেনি। তার পর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ।

বিবিসি বাংলা

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button