জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার জন্য যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ মঞ্চের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন। তথ্য-প্রমাণগুলো আমলে নিয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কার্যকরী তদন্ত হলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবে বলেও দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানান বলেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান।
প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ার করেছেন, মুখে বললেই হবে না দুর্নীতিকারীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে হবে। যদি না দিতে পারে তাহলে অভিযোগকারীদের শাস্তি হবে। এভাবে দিনের পর দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে সেটা আমি বরদাশত করতে পারি না।
তিনি বলেন, আমি দেখছি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। ভিসিকে দুর্নীতিবাজ বলছে। যারা দুর্নীতির অভিযোগ আনছে তাদের এই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে, তাদের তথ্য দিতে হবে। তারা তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
প্রধানমন্ত্রীর করা বক্তব্যের বিষয়ে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আন্দোলনের প্রথম থেকে আমরা তদন্ত চেয়ে আসছিলাম। গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরতদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলোচনায় উপাচার্য তদন্ত না করার সিদ্ধান্ত নিলেন। কেননা তদন্ত করতে হলে তাকে সরে যেতে হতো। তদন্ত না করার সিদ্ধান্তে আমাদের সন্দেহ আরও জোরালো হয়।
রায়হান রাইন আরও বলেন, উপাচার্যের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে প্রাথমিক প্রমাণ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। বিশেষ করে টাকা ভাগ-বাটোয়ারায় যারা যুক্ত ছিলেন, গণমাধ্যমে তাদের স্বীকারোক্তি। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক যেসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অর্থ কেলেঙ্কারির সংবাদ প্রকাশ করেছে, সেগুলো প্রাথমিক তদন্তের জন্য যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি।
সরকার এই প্রমাণগুলো আমলে না নিয়ে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ না করায় উষ্মা প্রকাশ করেন অধ্যাপক রায়হান।
তিনি বলেন, তথ্য-প্রমাণগুলো আমলে নিয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কার্যকরী তদন্ত হলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবে। এর মাধ্যমে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম উপাচার্য পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন, সেটি প্রমাণিত হবে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজের ই-টেন্ডার না করে সনাতন পদ্ধতির টেন্ডার, টেন্ডার শিডিউল ছিনতাই, ছিনতাইয়ের বিচার না করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপাচার্যের দুর্নীতি রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।পূর্বপশ্চিম